পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সিরাজদ্দৌলা।

হইল, সিংহাসনে পদার্পণ করিবার পূর্ব্বেই সিরাজদ্দৌলার সমাধিগহ্বর খনন করিবার আয়োজন হইল।

 জগৎশেঠের ঐশ্বর্য্যের কথা কাহারও নিকট অপরিচিত ছিল না। তাহা সত্য সত্যই “প্রবাদের মত” সমস্ত ভারতবর্ষে রাষ্ট্র হইয়া পড়িয়া ছিল। সেই ঐশ্বর্য্যই জগৎশেঠের পদগৌরবের মূল। সিংহাসনে আরোহণ করিবার পূর্ব্বে, সম্রাট ফর্‌রোক্‌শায়ায় কিছুদিন বাঙ্গালাদেশের রাজপ্রতিনিধি হইয়াছিলেন। তখন তাঁহার একরূপ দৈন্যদশা। সেই সময়েই সিংহাসনলাভের জন্য আয়োজন করা আবশ্যক হইয়া উঠিয়াছিল। সুতরাং তিনিও একদিন জগৎশেঠের দ্বারস্থ হইয়াছিলেন। জগৎশেঠ শাহজাদার প্রার্থনা পূরণ করায়, সেই অর্থবলে বলীয়ান হইয়া, শাহজাদা ফর্‌রোক্‌শায়ার ভারতবর্ষের সিংহাসনে আরোহণ করেন, এবং শেঠবংশের উপকার স্মরণ করিয়া ‘জগৎশেঠ’ উপাধিযুক্ত এক রত্নমোহর ও ফরমাণ প্রদান করেন। তদনুসারে জগৎশেঠ বাঙ্গালা, বিহার, উড়িষ্যার নবাব বাহাদুরের বামপার্শে আসন প্রাপ্ত হন, এবং নবাবগণ তাঁহার কথা উপেক্ষা করিয়া কোন কার্য্যে হস্তক্ষেপ না করেন, তন্মর্ম্মে রাজাদেশ প্রচারিত হয়। নবাব মুর্শিদ-কুলীখাঁ প্রথমতঃ নবাবদেওয়ান ছিলেন। সম্রাট কিছুতেই তাঁহাকে নবাব-নাজিম পদ প্রদান করিতে সম্মত হন নাই। অবশেষে জগৎশেঠের অনুরোধে কুলীখাঁ নবাবীপদে আরূঢ় হইয়াছিলেন;—মুর্শিদ কুলী খাঁর নবাবী সনদেও এ কথার উল্লেখ আছে।[১] এই সকল কারণে জগৎশেঠ পদগৌরবে প্রায় নবাবদিগের সমকক্ষ হইয়া উঠিয়া

  1. W. W. Hunter.