পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
সিরাজদ্দৌলা
প্যাট্‌ ক’রে চেয়ে কি দেখছ? দেখ বাবা,—সমুদ্রের গর্ভে নজর যাবে, কিন্তু মানুষের পেটের মধ্যে সেঁধোনো তোমাদের কর্ম্ম নয়। বড় জবর মাটির দ্যাল, বুঝেছ বাবা! ও,—তোমাদের পাহারা দিতে রেখেছে। তোমাদের আকাশে বুঝি যুদ্ধ-হাঙ্গামা নাই? তাহ’লে বাবা ঘুমিয়ে পড়তে। এই সব দেখ না, নবাবী ফৌজের তাঁবু পড়েছে, বেবাক পাহারাওয়ালা নাক ডাকিয়ে ঘুমুচ্ছে; দু’পিপে মদ খেলেও অমন ঘুম আসবে না। লড়াই দাঙ্গাটা বড় ঘুমের ওষুধ দেখ্‌ছি। নবাব থেকে ঘেসেড়া ব্যাটা পর্য্যন্ত তোফা নাক ডাকাচ্ছে। দেখ দেখ—এই কেল্লার দিক্‌টে মিট্‌মিটে আলো কি বলো দেখি? ওদের বিলিতি ধাত, দিশি ওষুধ খাটে না, লড়াই দাঙ্গা বাধলে বড় ঘুমোয় না। (ক্রমশঃ কুজ্ঝটিকায় দিক্ আবৃত হওন) এই যে তোমরাও দিব্যি কোয়াসার তাঁবুর ভিতর গা ঢাকা দিলে। একটু ঘুমুবে বোধ হ’চ্ছে। তোমাদেরও যুদ্ধ-হ্যাঙ্গাম বাধ্‌লো নাকি, নইলে খামকা এতটা ঘুম এলো কেন?

জহরার প্রবেশ

জহরা। কে তুমি?
করিম। প্রেয়সি, এতদিনে কি আমায় মনে পড়লো?
জহরা। কে তুমি?
করিম। কেন চাঁদ, চিন্‌তে পাচ্ছ না? আমি আফ্‌গানি আমলের বাঙ্গ্‌লার নবাব, মাম্‌দো হ’য়ে এই গাছটিতে থাকি। তোমার মতন আমার পেত্নী বেগম ছিল। আজ মাসকতক কে এক ব্যাটা গয়ায় পিণ্ডি দিয়ে আমার গৃহশূন্য করেছে। যখন এসে পড়েছ বিধুমুখী, চলো নিকে ক’রে, ডালে গিয়ে শুই। ঐ