পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সিরাজদ্দৌলা
রাজবঃ। বেগম সাহেব, আমার কোন অপরাধ নাই। আমি সত্য বল্‌চি, রাজকর্ম্মচারীরা সকলেই সিরাজের বিরূপ ছিল, কিন্তু বৃদ্ধ নবাবের অন্তিম বিনয়নম্র বচনে সকলে বশীভূত হয়েছে।
ঘসেটী। রাজবল্লভ, তুমি এত সরলচিত্ত কতদিন হয়েছ? সরল চক্ষে সকলকে দেখ্‌তে কতদিন শিখেছ? বৃদ্ধের বিনয়ে সকলের অন্তর দ্রব হয়েছে—না? তোমার অন্তরও হয়েছে না কি? তোমার পুত্র কৃষ্ণদাস যে নবাবী অর্থ লয়ে কলিকাতায় ইংরাজের শরণাগত হয়েছে, সেই অর্থ প্রত্যর্পণ কর্‌বার নিমিত্ত তারে মুর্শিদাবাদ প্রত্যাগমন করতে পত্র লিখেছ না কি? পিতা-পুত্রে সেই অর্থ নবাবের চরণে অর্পণ ক’রে মার্জ্জনা প্রার্থনা কর্‌বে না কি?
রাজবঃ। বেগম সাহেব, তিরস্কারের সময় নয়, সর্ব্বনাশ উপস্থিত। ধনরত্ন যা পারেন, যতদূর সাধ্য গোপন করুন, সিরাজ-সৈন্য মতিঝিল আক্রমণে অগ্রসর।
ঘসেটী। আমার সৈন্য কোথায়?
রাজবঃ। আপনার সর্ব্বাপেক্ষা বিশ্বাসপাত্র, প্রধান মন্ত্রণাদাতা মীর নজরআলী, আক্রমণ সংবাদ পাবা মাত্র সৈন্য ল’য়ে পলায়ন করেছে। সৈন্যের কর্ত্তৃত্ব ভার তাঁরই উপর ছিল। আমায় বৃথা অপরাধী কচ্ছেন; এক্ষণে আপনি সতর্ক হোন। শীঘ্রই সিরাজ আপন দুর্ব্যবহারে সকল মন্ত্রীকেই প্রকাশ্য শত্রু কর্‌বে। সুযোগ অনুসন্ধানে আমাদের কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
ঘসেটী। হ্যাঁ—সুযোগ অনুসন্ধান! যে দিন সিরাজ যুবরাজ হ’লো, সেইদিন হ’তে সুযোগ অনুসন্ধান কচ্ছ। দিন গেল, তোমার সুযোগ আর উপস্থিত হলো না! এক্রামদ্দৌলাকে সিংহাসন