পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় অঙ্ক
১১১
সিরাজ। অন্যায় ব্যবহার! বৃদ্ধ সয়তান, তোমাদের মন্তব্য কি আমরা অবগত নই বিবেচনা করো? একবার তোমার শিরশ্ছেদের আজ্ঞা হয়েছিল, বোধ হয় পুনর্ব্বার সে আজ্ঞা প্রদান ক’র্‌তে বাধ্য হব।
মীর জাঃ। জনাব, রাজমন্ত্রীরা সুমন্ত্রণা প্রদান করে! এ দরবারে মন্ত্রণা প্রদান অতি কঠিন কার্য্য।
সিরাজ। তবে অবসর গ্রহণ করুন। যার যার কঠিন বিবেচনা হয়, অবসর গ্রহণ করুন। এখন আর সকতজঙ্গ সজ্জিত নয়, যে অস্ত্র পরিত্যাগ ক’রে নবাবকে দমিত কর্‌বেন। ইংরেজের সহিত সন্ধি স্থাপনা আপনাদের মন্তব্য প্রত্যক্ষ দেখ্‌লেম;—মন্তব্য মত কার্য্য হলো! এ পর্য্যন্ত বরাবর সুমন্ত্রণা প্রদান কর্চ্ছেন। যুদ্ধে উৎসাহ দিয়ে কলিকাতায় র’য়ে গেলেন। আপনি সেনাপতি ছিলেন, একবারও তত্ত্ব লন নাই, যে নবাব কোথায়! রজনীতে প্রান্তরে বৃক্ষতলায় অবস্থান করি। বল্‌তে পারেন, ক্ষুদ্র ছয়শত নাবিক সৈয় ল’য়ে কি সাহসে ক্লাইব নিশাযুদ্ধে প্রবৃত্ত হ’লো? বাক্—বাক্যব্যয়ে প্রয়োজন নাই, অবসর গ্রহণের ইচ্ছা অবসর গ্রহণ করুন। অন্তরের ছুরী কাহারো লুক্কায়িত নাই। আমার নিজ সহিষ্ণুতায় আশ্চর্য্য হ’চ্ছি। অনেক সহ্য করেছি, এর পর কি হয় জানি না! সকলে স্বস্থানে গমন করুন।
করিম ব্যতীত সকলের প্রস্থান
সিরাজ। শঠ মন্ত্রীগণকে আর প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয় দণ্ড দেওয়া অবশ্য কর্ত্তব্য। যাই হোক সকলকে কারারুদ্ধ কর্‌বো, আর মাতামহীর অনুরোধ রক্ষা ক’র্‌বো না। করিম, মীরমদন-মোহনলালকে প্রেরণ করো। কৌশলে কার্য্য সম্পন্ন করাই উচিত ছিল, একে একে দণ্ড দেওয়া কর্ত্তব্য।