এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৮
সিরাজদ্দৌলা
চল্তো, যাহোক চোট্ পাট্ একদিক দিয়ে এক রকম হয়ে যেতো। আর যদি নরমের উপর দিয়েই চল্তো, কেউ না কেউ দয়া কর্তো। এ ছোঁড়া পায়ে ধর্লেও পাজী, আর কড়া হ’লে তো পাজীর পাজী।
মাণিক। আহা! কি সদাশয় নবাবই চিনেছ? হোসেনকুলি—ওর শিক্ষক ছিল—তারেই রাস্তায় ধরে কেটে ফেল্লে।
করিম। চাচা, সকলের তোমার মত বরদাস্ত নয়! “আলেফ-বে-তেসে” পড়িয়ে, অন্দরে ঢুকে মা-মাসীর মাঝে গিয়ে বস্বেন, বেকুফ নবাব, বরদাস্ত কর্তে পারে নাই। সকলের তো তোমার মত দেল দরিয়া মেজাজ নয়।
মীরজাঃ। কি বল্ছ করিম! ফৈজি, আহা অবলা স্ত্রীলোক, তারে দেওয়ালে গেঁথে মেরে ফেল্লে! এমন নিষ্ঠুরও জন্মায়!
করিম। চাচা, তোমার কি কোমল প্রাণ! দেখছি তুমি চাচীর পার্শ্বে আর একজন চাচাকে বসিয়ে সেলাম দিতে পারো। আগে যদি জান্তেম, ফৈজি বেটীকে তোমার সঙ্গে নিকে করিয়ে দিতেম। চাচা, একবার চোখ খুলে কথা কও। ছোঁড়া প্রাণ ঢেলে ভালবেসেছিল। চক্ষের উপর জোড়া-গাথা দেখ্লে, তার উপর ফৈজী বেটী মেছুনীর অধম ‘মা’তুলে গাল দিলে, নবাব বাচ্ছা, অত বেইমানি বরদাস্ত হবে কেন? ও তো ছোঁড়া বয়সে দ্যাল গেঁথে মেরেছে, তুমি হ’লে এই বুড়ো বয়সে টুকরো টুকরো ক’রে কুকুর দিয়ে খাওয়াতে। কাঙ্গালের একটা কথা কানে তোলো, ঠিকঠাক খয়ের খাঁ হ’য়ে ছোঁড়াটাকে চালিয়ে নাও।
রায়দুঃ। তারপর আমাদের হ’য়ে মুণ্ডুটা দেবে কিনা?
করিম। তা তো চাচা, দশমুণ্ড রাবণ হ’লেও পার্তেম না! তোমরা যে ক’জনে জোটপাট করো, দশটা মাথায় আঁট্তো না তো বাবা!