পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৬
সিরাজদ্দৌলা
মীরজাঃ। বিস্তর টাকা ইংরাজকে দিতে হবে! চিন্তা কি? নবাব হবো!—নবাব-ভাণ্ডারে টাকা না থাকে, মহাতাবচাঁদের নিকট লব। নবাব হ’লে টাকার চিন্তা নাই! ইংরাজ কি আমার সহিত প্রতারণা কর্‌বে, আমি ইংরাজের সহিত দুর্ব্যবহার না কর্‌লে কেন প্রতারণা কর্‌বে? ওরা স্বার্থপর, নানা অছিলায় বার বার অর্থ চাইবে। নবাব হ’লে আর চিন্তা কি? আমি তো কাপুরুষ সিরাজদ্দৌলা নই! যতদিন কার্য্য সমাধা না হচ্ছে, কোনরূপে স্থির হ’তে পাচ্ছি না, কি হয় কে জানে! সাহস ক'রে তো ঝাঁপ দিলেম!
সিরাজদ্দৌলা ও আলিবর্দ্দী-বেগমের প্রবেশ
সিরাজ। মীরজাফর খাঁ বাহাদুর, চিন্তা-মগ্ন কেন? আপনাকে পুনরায় সেনাপতি-পদে বরণ কর্‌তে এসেছি। আপনার নিকট দূত প্রেরণ করেছিলেম, আপনি দরবারে উপস্থিত হন নাই, সেই নিমিত্তই এসেছি; ভূতপূর্ব্ব নবাব-মহিষীও এসেছেন।
মীরজাঃ। জনাব—জনাব, আমার সৌভাগ্য! নবাব-মহিষী এতদূর ক্লেশ করেছেন।
সিরাজ। শিষ্টাচারের সময় নয়, শিষ্টাচারের জন্য আসি নাই,—ক্ষমা করুন, ক্ষমা প্রার্থনার জন্য এসেছি। আমার ব্যবহার ভুলে যান। আমি ঘোর বিপদে আপনার শরণাপন্ন,—শরণাগতকে আশ্রয় দেন।
মীরজাঃ। জনাব, গোলামকে এত অনুনয়-বিনয় কেন?
সিরাজ। খাঁ বাহাদুর শুনুন;—মুসলমানের চন্দ্রাঙ্কিত পতাকা রক্ষা কর্‌তে কেবলমাত্র আপনিই সক্ষম,—বিজাতীয় দম্ভ চূর্ণ করুন, বাঙ্গ্‌লায় বীরবীর্য্য শত্রুকে প্রদর্শন করুন,—মাতামহের নামে মিনতি কচ্ছি, আর বিমুখ হবেন না।