পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৮
সিরাজদ্দৌলা
সিরাজ। আমার হস্তী আনয়ন করো, আমি স্বয়ং যুদ্ধস্থলে যাবো। দেখি আমায় নবাব ব’লে সেনারা গ্রহণ করে কি না; আমার বীরবংশে জন্ম কি না পরিচয় দেবো। মীরমদন পড়েছে, আমি স্বয়ং না যুদ্ধ ক’র্‌লে কে যুদ্ধ ক’রবে। বিদেশী বণিক দেখুক,—এখনো বাঙ্গলার বীর্য্য নির্ব্বাপিত নয়, নবাবের প্রভাবে ষড়যন্ত্রকারীর মন্ত্রণা বিফল হয় কি না দেখুক! হয় ইংরাজ নির্ম্মূল হবে, নয় আলীবর্দ্দীর বংশ নাশ হবে।(গমনোদ্যম)

বালকবেশে জহরার প্রবেশ

জহরা। জনাব জনাব, বালকের গোস্তাকি মার্জ্জনা হয়,—সেনাপতি মোহনলাল, বীর বিক্রমে বিপক্ষকে আক্রমণ কচ্ছেন। জনাবকে রণস্থলে দেখ্‌লে, তিনি জনাবের রক্ষার্থে আক্রমণ হ’তে বিরত হবেন। মীরজাফর, রায়দুর্লভ প্রভৃতি কুচক্রীর সেনারা তাদেরই বশীভূত, জনাবের আজ্ঞা কতদূর রক্ষা করবে জানি না। জনাব যুদ্ধস্থলে গেলে এখনি বিপর্য্যয় ঘট্‌বে। চিন্তা দূর করুন, মোহনলালের প্রভাবে রণজয় হবে। আমি মীরজাফরকে ডেকে দিচ্ছি।
সিরাজ। যাও, সত্বর যাও, ডেকে আনো।
জহরার প্রস্থান
দেখি কি কঠিন পাষাণে নির্ম্মিত! অনুনয়-বিনয়—কিছুতেই কি কঠিন হৃদয় দ্রব হবে না? কি জানি, রাজ্য লোভ—রাজ্য লোভ! যখন লোকভয়, ধর্ম্মভয়, মনুষ্যত্ব বর্জ্জন করেছে, তখন কি কথায় দুরভিসন্ধি পরিত্যাগ ক’র্‌বে? আমি স্বয়ং তাকে রাজ্য প্রদান ক’র্‌বো। ইংরাজ পরাজিত হোক, বাঙ্গলার গৌবব রক্ষিত হোক, মুসলমানের প্রভাব অপ্রতিহত থাকুক, বিদেশীর গর্ব্ব খর্ব্ব হোক। আমার রাজ্য প্রয়োজন নাই, মীরজাফর রাজেশ্বর হোক। রাজ্য