পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৬
সিরাজদ্দৌলা
লুৎফ। যাও জোবেদি—যাও, আমার প্রাণ কিছুতেই স্থির হচ্ছে না। নবাবের দেখা পেলে ব’লো, একবার মাত্র দাসীকে দর্শন দিয়ে, রাজকার্য্যে নিযুক্ত হোন—একবার দর্শন দিয়ে যান।
জোবেদির প্রস্থান

আমার অন্তরে অনবরত হাহাকার ধ্বনি, আমার প্রাণ কেঁদে কেঁদে উঠ্‌ছে, সকলই যেন ঘোরতর তিমিরাচ্ছন্ন জ্ঞান হচ্ছে, চতুর্দ্দিকে অমঙ্গল ধ্বনি! যেন পৈশাচিক উল্লাসে রাজপুরী পরিপূর্ণ!

গীত।

কেন প্রাণে ওঠে হাহাকার।
মলিন হৃদয়শশী, নেহারি আঁধার॥
এ পুর শ্মশান সম, নগরে নিবিড় তম,
শুনি যেন হয় ভ্রম, করুণ রোদন কার।
যেন পিশাচের রঙ্গ, ভীষণ হেরি ভ্রুভঙ্গ,
আতঙ্কে শিহরে অঙ্গ, শিথিল শোণিত ধার॥
সমরে জীবন-ধন, দিয়াছি কি বিসর্জ্জন,
নিরাশে মগন মন, কোথা মম প্রাণাধার

এই যে নবাব—একি স্বর্ণকান্তি এমন শ্রীহীন কেন!
সিরাজদ্দৌলার প্রবেশ
নবাব—জাঁহাপনা!
সিরাজ। নবাব কে—কারে নবাব বলছ? বিদ্রোহী, বিদ্রোহী—চতুর্দ্দিকে বিদ্রোহী! রাজা-প্রজা, অমাত্য-নফর, ছোট বড় সকলেই শত্রু, সকলেই বিদ্রোহী, এখানেও বিদ্রোহীর প্রভাব। ঐ শোন—প্রজারা “জয় কোম্পানী বাহাদুরের জয়” ব’লে উচ্চনাদ কচ্ছে।