পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভূমিকা

 আলিবর্দ্দীর সময় হইতে সিরাজদ্দৌলার শোচনীয় পরিণাম পর্য্যন্ত যে সকল স্বার্থচালিত ঝঞ্ঝাপূর্ণ ঘটনা প্রভাবে বঙ্গ-সিংহাসন আলোড়িত হইয়াছিল, তাহার সম্পূর্ণ চিত্র প্রদর্শন ব্যতীত সিরাজদ্দৌলা নাটক প্রস্ফুটিত হয় না। আলিবর্দ্দীর জীবিতাবস্থাতেই সিরাজ-চরিত্র বিকাশ পাইতেছিল। সিরাজ-চরিত্র লইয়া দুই খণ্ড নাটক লিখিলে, প্রকৃত অবস্থা বর্ণিত হইতে পারিত। কিন্তু উপস্থিত দর্শকের তৃপ্তিকর হইত কি না জানি না। সেক্‌সপিয়ারের কয়েকখানি ঐতিহাসিক নাটক দুই তিন খণ্ডে বিভক্ত। কিন্তু আমি সেক্‌সপিয়ার নহি। সেক্‌সপিয়ারের নাটকগুলি, রাজা ও পারিষদবর্গের সম্মুখে অভিনীত হয়। অনেক দর্শকই নাটকোল্লিখিত ব্যক্তিগণের বংশধর; সুতরাং তাঁহাদের নিকট উক্ত নাটকগুলি আদরণীয় হইয়াছিল। সাধারণ দর্শকগণও স্বাধীন দেশের রাজনৈতিক প্রজা, সুতরাং স্বদেশে ক্রমান্বয়ে রাজ্যশাসন প্রণালীর বিকাশ ও জাতীয় গৌরব যেরূপ বর্ণিত হইয়াছে, তদভিনয় দর্শনে তাঁহারা তৃপ্তিলাভ করিয়াছিলেন। আমার সে সুযোগের অভাব। এই কারণে সিরাজদ্দৌলা নাটক লিখিবার উদ্যম করিয়া পরিত্যাগ করিয়াছিলাম। ‘সাহিত্য’ সম্পাদক শ্রীযুক্ত সুরেশচন্দ্র সমাজপতি মহাশয়ের উৎসাহে নাটকখানি এক খণ্ডে সমাপ্ত করিয়াছি; সেইজন্য নাটকের আকার অপেক্ষাকৃত বৃহৎ হইয়াছে। ঐতিহাসিক নাটকে ঐতিহাসিক ঘটনাবলী, সেক্‌সপিয়ারের লেখনী-প্রসূত হইয়াও, অনেকের মতে, স্থানে স্থানে নীরস হইয়া পড়িয়াছে। দোষ আমার থাকিবে না, ইহা আশা করা আমার পক্ষে বাতুলতা মাত্র। ঐতিহাসিক নাটক ঐতিহাসিক পটে চিত্রিত