পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
সিরাজদ্দৌলা
হলওয়েলকে মুক্তিদান ক’রে, ওলন্দাজদিগের হস্তে প্রত্যর্পণ করাই নবাবী আদেশ ছিল। কিন্তু নবাব-আদেশের বিপরীত কার্য্য কি নিমিত্ত হয়েছে? এর উত্তর আমার সেনাপতি মীরজাফর সাহেবের নিকট পাবার ইচ্ছা করি, কারণ কলিকাতায় তাঁহার হস্তেই হলওয়েল প্রভৃতি অর্পিত হয়েছিল।
মীরজাঃ। কর্ম্মচারীদের ভুলক্রমেই এরূপ হয়েছিল। এখন হলওয়েল মুক্তিলাভ করেছে।
সিরাজ। সে কর্ম্মচারীদের ভুল সংশোধন দ্বারা হয় নাই। আমরা তাদের কারারুদ্ধ হওয়ার অবস্থা, মাতামহী বেগম-মহিষীর নিকট অবগত হ’য়ে, অমাত্য মীরমদন দ্বারা তাদের মুক্তির আজ্ঞা প্রেরণ করি। হলওয়েল একটা লোমহর্ষণ সংবাদ প্রদান কর্‌লে। ঈশ্বর করুন তার সংবাদ মিথ্যা। সংবাদ সত্য হ’লে, নবাবীরাজ্যের চিরকলঙ্ক স্বরূপ তাহা জগতে ঘোষিত হবে। সংবাদ এই যে, “ব্ল্যাকহোল্” নামে ইংরাজ দুর্গস্থিত একটী ক্ষুদ্রায়তন কারাগারে, ১৪৬ জন ইংরাজ বন্দী ক’রে রাখা হয়। সেই কারাগারের একটী ক্ষুদ্র গবাক্ষ মাত্র ছিল, অপর বায়ু প্রবেশের পথ ছিল না। সেই নিমিত্ত অশেষ যন্ত্রণায় অধিকাংশ হতভাগ্য ইংরাজের প্রাণ নষ্ট হয়। এ প্রাণনাশের দায়িত্ব আমারই মস্তকে স্থাপিত হবে। আপনার উপর যদিচ ভার অর্পিত হয়েছিল, তাহা সাধারণের বিদিত হবে না। যাহা হবার হয়েছে, কিন্তু এ কার্য্যে রাজ্য কলঙ্কিত!
মীরজাঃ। জনাব, এ মিথ্যা রটনা।
সিরাজ। ঈশ্বর করুন, মিথ্যাই হোক।

মোহনলালের প্রবেশ

মোহন। জনাব, জয় সংবাদ মুর্শিদাবাদে উপস্থিত হ’লে, নগরে