পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
সিরাজদ্দৌলা
সিরাজ। বার বার ঐ কথাই বলছ? অপব্যয়ী সকতজঙ্গের অর্থের অভাব হয় নাই, নবাবী অর্থেরই অভাব হ’য়েছে?
জগৎ। রণব্যয়ে রাজকোষ শূন্য।
সিরাজ। কিন্তু রাজ্য প্রজাশূন্য নয়। এ কথা নবাব-দরবারে কেন জ্ঞাপিত হয় নাই? প্রজার দ্বারা অনায়াসে অর্থের সঙ্কুলান হ’তো।
জগৎ। তা’হলে প্রজা পীড়িত হ’তো
সিরাজ। দয়ার্দ্রহৃদয়! সেই নিমিত্ত অর্থ সংগ্রহ করো নাই? নবাব-দরবারে সাবধানে কথা কও, নচেৎ এখনি বেকুবির দণ্ড হবে। কি বল্‌বার আছে? তোমার দোষখণ্ডনের কি কথা আছে? কৃতঘ্ন! বারবার মার্জ্জনার এই ফল! নবাব-অন্নে প্রতিপালিত হ’য়ে নবাব-বিরুদ্ধ আচরণ! দুষ্ট, খল, বিশ্বাসঘাতক—এই দণ্ডে তিন কোটী মুদ্রা নবাব-দরবারে উপস্থিত করো, নচেৎ তোমার নিস্তার নাই।
জগৎ। জনাব, বাঙ্গ্‌লার সিংহাসন তো স্বাধীন, বাঙ্গ্‌লার নবার দিল্লীর সুবেদার নাম মাত্র। স্বর্গীয় আলিবর্দ্দীর আমল হ’তে তো কর প্রেরিত হয় নাই।
সিরাজ। বিশ্বাসঘাতক, এইমাত্র দরবারে বল্‌লে, অর্থাভাবে সনন্দ আনা হয় নাই, পরক্ষণেই অন্যপ্রকারে দোষ স্খালনের চেষ্টা পাচ্ছ! রাজদ্রোহী, ধূর্ত্ত, শঠ, এই মুহূর্ত্তে অর্থ উপস্থিত না হ’লে, তোমার প্রতি গুরুতর দণ্ডাজ্ঞা হবে।
জগৎ। তিনকোটী মুদ্রা কোথা পাবো?
সিরাজ। এখনো নবাব সমীপে প্রতারণা? বেইমান! (জগৎশেঠকে চপেটাঘাত) কে আছিস, রাজদ্রোহীকে কারাগারে নিয়ে যা!
জগৎশেঠ মহাতাবচাঁদকে লইয়া প্রহরীর প্রস্থান