পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
সিরাজদ্দৌলা
আমার এক্রামদ্দৌলা কবরে! আমিনা নবাব-মাতা, আমিনার পুত্রের গৃহে আমি বন্দী! আবাস ভূমিশায়ী, অর্থহীনা, সহায়হীনা, আমিনার পুত্রের অন্নদাসী! আমি নবাবের জ্যেষ্ঠা কন্যা, আমার ছায়া স্পর্শ ক’রতে লোকে ঘৃণা করে, আমিনার ছায়ায় সেলাম দেয়! আমিনা অতুল ঐশ্বর্য্যশালিনী, আমার গুপ্ত ধনাগার লালকুঠি ইষ্টকচূর্ণে আবৃত। এক শান্তি, ঝিলগর্ভে ধনাগার নির্ম্মিত। যারা ধনাগার নির্ম্মাণ করেছিল, তারাও সেই ধনাগারে মৃত। সে সন্ধান রাজবল্লভও জানে না। ভূমি খনন ক’রে সে সন্ধান পাবে না। থাকো—থাকো—যারা হত হয়েছ, অশরীরি অবস্থায় ধনাগার রক্ষা ক’রো; সিরাজের শত্রুর হস্তে ধনাগার অর্পণ করো, যারা সিরাজের মস্তক ছেদন ক’রে ভূতলে পাতিত ক’র্‌বে, তাদের হস্তে অর্পণ ক’রো। ছিঃ ছিঃ কি কুক্ষণে রাজবল্লভের সঙ্গে দেখা হয়েছিল! কুক্ষণে তার কুমন্ত্রণায় কর্ণপাত করেছিলেম! কুক্ষণে সেই ভীরুর উত্তেজনায় রাজ্য-লালসা করেছিলেম! হোসেন কুলি—হোসেন কুলি! তুই কোথা?—দেখে যা, যেমন ঈর্ষ্যানলে দগ্ধ হ’য়ে তোর প্রাণবধে সম্মত হ’য়েছিলেম, তার সমুচিত দণ্ড পেয়েছি! আমি বন্দী, সিরাজের বাঁদী, সহায়-সম্পত্তিহীনা; আমার গর্ভধারিণী মাতা কারারক্ষক! এমন কেউ নাই, যে আমায় এই কারাগার হ’তে উদ্ধার করে!

জহরার প্রবেশ

জহরা। এই যে আমি আছি।
ঘসেটী। কে তুমি?
জহরা। নবাব মহিষীর বাদী, যে, তুমি লালকুঠি হ’তে আস্‌বার সময়,