পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৪
সিরাজদ্দৌলা
এক পরমাসুন্দরী বারবিলাসিনীকে এনে বেগম করেন। বারনারী, স্বভাব বশতঃই প্রতারণাপরায়ণা;—তার শয়ন-গৃহে অপর পুরুষকে ল’য়ে এসেছিল। সেই অপরাধে নবাব, যৌবনসুলভ ক্রোধ বশতঃ ফৈজির গৃহের বায়ু-প্রবেশের সকল দ্বার রুদ্ধ ক’রে, উৎকট যন্ত্রণায় তার প্রাণবধ করে। সেই মহা পাপের প্রায়শ্চিত্ত জন্য ফকির আগমন করেছিলেন। রাজ্যের শত্রুরা, হায়, অভাগা রাজ্য শত্রুপূর্ণ! রাজ্যের শত্রুরা, সেই সাধুর প্রতি এই রাজদ্রোহিতা অপবাদ প্রদান করে। সাধুর কোপাগ্নি যা’তে প্রজ্জ্বলিত হয়, এই তাদের ইচ্ছা দেখ্‌ছি, শত্রুর মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়েছে!
লুৎফ। মা, মা, সত্য বলেছেন; নবাব কখনো কখনো অর্দ্ধনিদ্রিত অবস্থায়, ফৈজির নাম ক’রে অনুতাপ করেন। এখন কিরূপে ফকিরকে প্রসন্ন করা যায়?
ঘসেটী। ফকিরণী আমায় বলেছে—“তাঁকে নিমন্ত্রিত ক’রে সম্মানের সহিত রাজপুরে এনে, তাঁর চরণে অনুনয়-বিনয় করা, আর উপায় নাই।” কিন্তু সিরাজ যুদ্ধে গমন করেছে, কি উপায় হবে?
লুৎফ। কেন, আমরা যদি নিমন্ত্রণ করি?
ঘসেটী। না—সিরাজের আহ্বান ব্যতীত ফকির—নগরে পদার্পণ কর্‌বেন না।
লুৎফ। তবে কি উপায় হবে?
ঘসেটী। নেই, এক উপায় বোধ হয় হ’তে পারে। যদি সিরাজের নামাঙ্কিত মোহর পাওয়া যায়, সেই মোহর-অঙ্কিত পত্র তাঁর নিকট প্রেরিত হ’লে, কিরূপ হয় বলা যায় না। কিন্তু সে মোহরই বা কিরূপে পাওয়া যাবে! সে মোহর পাওয়া গেলে, তাঁকে নিমন্ত্রিত ক’রে আন্‌তে পারা যায়। কিন্তু সে উপায় তো নাই!