পাতা:সিরাজী উপন্যাস সমগ্র.pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিলেন । ঈসা খাঁর রুগ্ন ও জীৰ্ণ দেহে আবার নবযৌবনের কান্তি-শ্ৰী ফিরিয়া আসিতে লাগিল। হিমানী-পীড়িত শ্ৰীহীন-উদ্যান যেমন বসন্ত-সমাগমে নব-পত্র-পল্লব এবং ফল-ফুল মঞ্জরীতে বিভূষিত হইয়া পিকবধূর আনন্দবিধান করে, ঈসা খাঁর স্বাস্থ্য-শ্ৰীও তেমনি স্বর্ণময়ীর প্রাণে অতুল আনন্দ দান করিতে লাগিল। জীবনের স্বার্থকতার পূর্ণ পরিতৃপ্তি বােধে, জীবনানুভূতি স্বর্ণের নিকটে নিতান্তই সুবিধাময় বলিয়া বোধ হইতে লাগিল। নিজের দুঃখ-কষ্ট বা অসুবিধার বিষয় স্থান পাইতে পারে, এমন একটু স্থানও হৃদয়ে রহিল না। তাহার হৃদয়-মন্দিরের প্ৰেমদেবতা, অন্তর-আকাশের পূর্ণচন্দ্ৰমা, মন-উদ্যানের মন্দাকিনীধারা জীবনকুঞ্জের শোভন গোলাপ-ঈসা খাকে যে মৃত্যুর কবল হইতে নব-জীবনে ফিরাইয়া আনিতে পারিয়াছে, তাহার জন্য যে নিজ বাহুর মাংসচ্ছেদ করিয়া দিবার সুযোগ পাইয়াছে, সেই মধুর ঘটনা ও উল্লাসে স্বর্ণময়ীর হৃদয়ের কুঞ্জে অপার্থিব প্রেমের সুধা রাগিণীর যে বিনোদ ঝঙ্কার বাজিয়া উঠিয়াছে, তাহাতে তাহার হৃদয় ভরপুর হইয়াছে। প্ৰেমাস্পদের জন্য স্বাৰ্থত্যাগ এবং আত্মত্যাগে যে আনন্দ, তাহা ভুক্তভোগী ব্যতীত অন্যের পক্ষে ধারণা করা অসম্ভব! স্বর্গে সে আনন্দ নাই। একবিংশ পরিচ্ছেদ लिन মাসাধিক কাল পরে বীরবর। ঈসা খাঁ সম্পূর্ণ সুস্থ ও পূর্ববৎ বলিষ্ঠ হইলেন। সোলতান নিজাম শাহু উৎফুল্পচিত্তে এক দরবার আহবান করিয়া ঈসা খাঁর স্বাৰ্থত্যাগ, স্বজাতি-প্ৰেম এবং প্রখর বীরত্বের জন্য মুক্তকণ্ঠে প্রশংসা কীর্তন করিয়া সোলতান চতুষ্টয়ের পক্ষ হইতে হীরকের মুষ্টিযুক্ত একখানি বহুমূল্য তরবারি, বহুমূল্য রাজকীয় পরিচ্ছদ, একটি অত্যন্ত্রদ ঘটিকা-যন্ত্র, একছড়া বৃহদাকারের মুক্তার মালাসহ “বাবর-জঙ্গ” উপাধি প্রদান করিলেন। অতঃপর নিজাম শাহের বেগম জান্নাত মহলের আগ্ৰহ এবং উদযোগে বিজয়নগরেই ঈসা খাঁ এবং স্বর্ণময়ীর বিবাহ-ব্যাপার সম্পন্ন হওয়া স্থিৱীকৃত হইল। সোলতান নিজাম শাহ বিপুল উদ্যোগে বিবাহের আয়োজন করিতে লাগিলেন। উদাহ-ক্রিয়ার জন্য বিরাট মহাফেল সংগঠিত হইল। রাজ্যময় ধুমধাম হৈচৈ পড়িয়া গেল। দশ হাজার লোক বসিতে পারে, এমন বিরাট সভামণ্ডপ নির্মিত হইল। নানা শ্রেণীর দর্পণ, ময়ূরপুচ্ছ, পতাকা, ফুল ও পাতা দ্বারা মজলিস আরস্তা করা হইল। দশ সহস্ৰ বেলওয়ার ও স্বর্ণ-রৌপ্য নির্মিত বিচিত্ৰ-দৰ্শন ঝাড় 9. vrv. apy.. guy fer y እoፃ