প্ৰথম পরিচ্ছেদ মন্দিরে যখন আসমুদ্রাহিমাচল সমগ্ৰ ভারতবর্ষের প্রতি নগরে, দুর্গে ও শৈলশৃঙ্গে ইসলামের অর্ধচন্দ্ৰ-শোভিনী বিজয়-পতাকা গৰ্ব-ভরে উডউীয়মান হইতেছিল,— যখন মধ্যাহ্ন-মর্তণ্ডের প্রখর প্রভায় বিশ্বাপূজ্য মুসলমানের অতুল প্ৰতাপ ও অমিত প্রভাব দিগদিগন্ত আলোকিত, পুলকিত ও বিশোভিত করিতেছিল,—যখন মুসলমানের লোক-চমকিত সৌভাগ্য ও সম্পদের বিজয়-ভেরী, জলদমন্দ্ৰে নিনাদিত হইয়া সমগ্ৰ ভারতকে ভীত, মুগ্ধ ও বিস্মিত করিয়া তুলিতেছিল-যখন মুসলমানের শক্তি-মহিমায় অনুদিন বিবৃদ্ধিমান শিল্প ও বাণিজ্যে, কৃষি ও কারুকার্যে ভারত-ভূমি ধনধান্যে পরিপূর্ণ এবং ঝদ্ধিশ্ৰীতে বিমণ্ডিত হইতেছিল— যখন প্ৰতি প্ৰভাতের মন্দ সমীরণ কুসুম-সুরভি ও বিহগ-কাকালীর সঙ্গে, মুসলমানের বীর্যশালী বাহুর নববিজয়-মহিমার আনন্দসংবাদ বহন করিয়া ফিরিতেছিল—যখন মুসলমানের সমুন্নত শিক্ষা ও সভ্যতায় সুমার্জিত রুচি ও নীতিতে ভারতের হিন্দুগণ শিক্ষিত ও দীক্ষিত হইয়া কৃতাৰ্থতা ও কৃতজ্ঞতা অনুভব করিতেছিল যখন ব্ৰহ্মতেজঃ-সন্দীপ্ত দরবেশদিগের সাধনায় ইসলামের একত্ববাদ ও সাম্যের নির্মল কৌমুদীরাশি, কুসংস্কারাচ্ছন্ন শত ধাবিচ্ছিন্ন তেত্ৰিশ কোটি দেবোপাসনার তামসী-ছায়ায় সমাবৃত ভারতের প্রাচীন অধিবাসীদিগের হৃদয়ে এক জ্যোতির্ময় অধ্যাত্মরাজ্যের দ্বার প্রদর্শন করিতেছিল-যখন মুসলমানের তেজঃপুঞ্জ মূর্তি, উদার হৃদয়, প্রশান্ত বক্ষ, বীৰ্যশালী বাহু, তেজস্বী প্রকৃতি, বিশ্বউদ্ভাসিনী প্ৰতিভা, কুশাগ্ৰসূক্ষ্ম বুদ্ধি, জ্বলন্ত চক্ষু, দোর্দণ্ড প্রতাপ, প্রমুক্ত করুণা, নির্মল উদারতা, মুসলেমেতির জাতির মনে বিস্ময় ও ভীতি, ভক্তি ও গ্ৰীতির সঞ্চার করিতেছিল,--যখন উত্তরে শ্যাম-কাননাম্বব্ল গগন-বিচুম্বী তুষারকিরীটি হিমগিরি ত৷ হার গভীর মেঘ-নিৰ্ঘোষে ও চািপলা-বিকাশে এবং দক্ষিণে অনন্ত-বিস্তার ভারতসমুদ্র মনন্ত কলকারোলে ও অনন্ত-তরঙ্গ বাহুব বিচিত্র ভঙ্গিমায়া, মুসলমানের অবদান - পরম্পরার বিস্তাত্ৰ-যশোগাথা কীর্তন করিতেছিল, --- যখন পৌরাণিক বংশমর্যাদাভিমানী চন্দ্ৰ, সূৰ্য, অনল বংশীয় এবং রাঠোর ব্ৰাহ্মাণ ক্ষত্রিয, শশী, রাজপুত, জািঠ গোত্রীয় অসংখ্য জাতি, মহিমান্বিত মুসলমানের গিরিশৃঙ্গfলদৰ্পনকারী চলণতলে ভুনতা-জানু ও বিনন্ত-মন্তক হইতে কুষ্ঠার পরিবর্তে উৎকণ্ঠঃ প্ৰকাশ করিতেছিল---যখন নগরীকুলসম্রােন্ত্রী বিপুল বীর্য ও ঐশ্বর্যশালিনী
