পাতা:সিরাজী উপন্যাস সমগ্র.pdf/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভীষণ তেজে তীর নিক্ষেপ করিয়া এই মহাবিপদের অবসান করিলে? কাহার বাহুতে এমন দুর্জয় শক্তি যে, হৰ্ত্তীর মন্তকের মন্তিান্ত পর্যন্ত তীরে বিদ্ধ করিয়াছে? সকলেই দেখিতে পাইল যে, বীরকুল-চূড়ামণি আফজাল খাই মুহূর্ত মধ্যে ধনুকে জ্যা আরোপণ করিয়া সবল ও নিপুণ হন্তের অব্যৰ্থ লক্ষ্যে রাজকুমারী তারাবাঈকে আকস্মিক মৃত্যুর হস্ত হইতে রক্ষা করিয়াছেন। চতুর্দিকে আফজাল খাঁর নামে জয়ধ্বনি হইতে লাগিল। সকলেই মুক্তকণ্ঠে আফজাল খাঁর সাহস এবং তেজের কথা আলোচনা করিতে লাগিল । অতঃপর বিচ্ছিন্ন মিছিল আবার সুশৃঙ্খল করা হইল। শ্রেণীবদ্ধ হইয়া সৈনিকগণ তিনবার করিয়া কুর্ণিস করতঃ আফজাল খাঁ এবং তােহােৱ প্ৰভু বিজাপুরের সোলতানের দীর্ঘজীবন উচ্চকণ্ঠে কামনা করিল। আফজাল খাঁ অশ্ব হইতে অবতরণ করিলে সর্বপ্রথমে রামদাস স্বামী ধান্য-দূর্ব দ্বারা আফজাল খাঁর মঙ্গলাের্চনা করিলেন। অতঃপর পুরুষ ও রমণীরা মিলিয়া আফজাল খাঁর শিরে ও সর্বাঙ্গে রাশি রাশি পুষ্পবর্ষণ করিতে লাগিল। এত পুষ্প বর্ষণ হইতে লাগিল যে, আফজাল বার নিঃশ্বাস রুদ্ধ হইবার উপক্রম হইল । উপদ্রব দেখিয়া রামদাস স্বামী সকলকে ধমক দিলেন। কিন্তু যুবতীদিগের মধ্যে একটি রমণী নিষেধের পরও গোলাপের পাপড়ীি আফজাল খাঁর মুখে বর্ষণ করিতে লাগিল। রামদাস স্বামী তখন বিরক্ত ভাবে বলিয়া উঠিলেন, “কি তারা, কি করাহু! তোমার কি ইস নাই?” কিন্তু তারা। তবুও আর এক মুষ্টি পুষ্প বর্ষণ করিয়া ক্ষান্ত হইল। তারার ভঙ্গী ও পুষ্প বর্ষণে মত্ততা দেখিয়া আফজাল খাঁ ঈষৎ স্মিতহাস্য করিলেন । অতঃপর পরম যত্নে সুসজ্জিত প্রাসাদাভ্যন্তরে আফজাল খাঁকে লইয়া রামদাস স্বামী এবং শিবাজীর পিতা শাহজী তাঁহার সেবায় ও পরিতোষ-বিধানে নিযুক্ত হইলেন। সৈনিকপুরুষদিগকেও যথাযোগ্য বাসস্থান এবং আহার প্রদান করা হইল। আদর-অভ্যর্থনা এবং সন্মান-সম্বর্ধনা পূরামাত্রায় চলিতে লাগিল। পঞ্চম পরিচ্ছেদ গভীর রাত্রি। জন-প্ৰাণীর সাড়াশব্দ নাই। আকাশে কৃষ্ণা পঞ্চমীর চন্দ্র কিরণধারায় সমস্ত পৃথিবীকে পুলকিত করিয়া রাখিয়াছে! নানা জাতীয় নৈশকুসুমের গন্ধ বাহিয়া মৃদুমন্দ গতিতে বায়ু বহিয়া যাইতেছে। এমন সময় রায়গড়ের একটি বৃহৎ উদ্যানমধ্যস্থ ক্ষুদ্ৰ অট্টালিকায় শিবাজী, তাহার পিতা শাহজী, গুরু রামদাস স্বামী, বলবন্ত রাও, মালজী প্রভৃতি মারাঠা প্রধানগণ গুপ্ত SV