পাতা:সিরাজী উপন্যাস সমগ্র.pdf/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বাদশ পৰিছেদ৷ নৈশ-অন্ধকার দূর করিয়া উধাৱ শুভ্র আলোক-রেখা পূর্ব-গগনে ফুটিয়া উঠিয়াছে। নানাজাতীয় বিহুজরাজি সুমধুর কৃজনে কাননরাজি মুখরিত করিয়া তুলিয়াছে। ৰই গকিণ্ঠে নানা ছন্দে বিশ্ববিধাতায় বন্দনাগীতি গীত হইবার সঙ্গে সঙ্গেই আফজাল খাঁৱ শিবিরে ফজরের নামাজের সুধাবষী আজান ধ্বনি ধ্বনিত হইল। যোতৃগণ শীঘ্র শীঘ্ৰ অজু করিয়া উপাসনায় মনােনিবেশ করিলেন। উপাসনা শেষে মোসলেম শিবিরের প্রধান প্রহরী আসিয়া আফজাল খাকে নিবেদন করিলেন যে, শেরমর্দন খান এবং তাঁহার অনুচরগণ কেহই তাম্বুতে নাই। পরে প্রকাশ পাইল, তারাবাঈও তাম্বুতে নাই। তাহার জিনিসপত্র সমস্তই পড়িয়া রহিয়াছে। তখন চতুর্দিকে একটি মহা খোজ পড়িয়া গেল! নাই—নাইনাই তো শেরমর্দন খানের দলের কোনও লোকই নাই! চারিদিকে সবাই খুজিতে লাগিল। কিন্তু কোথাও পাওয়া গেল না। শিবিরে মহা হুলস্থূল পড়িয়া গেল। সুদক্ষ গুপ্তচরদিগকে চতুর্দিকে মারাষ্ঠী শিবিরে প্রেরণ করা হইল। ক্রমশঃ জানিতে পারা গেল যে, শেরমর্দন খানই তারাবাঈকে বন্দী করিয়া লইয়া গিয়াছে। শেরমর্দন খান এবং তাহার অনুচরগণ কেহই মুসলমান নহে, সকলেই মারাঠী । তারাবাঈকে হরণ করিয়া লইয়া যাইবার জন্যই তাহারা মুসলমানের বেশে আসিয়া আফজাল খাঁর সৈন্যদল-ভুক্ত হইয়াছিল। শেৱমর্দান-স্বয়ং মালোজী । এই মালোজীর করেই শিবাজী তারাবাঈকে সমৰ্পণ করিতে কৃতসংকল্প হইয়াছিলেন। মালোজী তারার রূপ-মাধুরী দর্শনে মুক্ত হইয়া গিয়াছিলেন। তারাকে মুসলমান শিবির হইতে উদ্ধার করিবার আর কোনও পথ না পাইয়া অবশেষে মালোজী ছদ্মবেশ ধারণা করিয়া আফজাল খাঁর সৈন্যদলে ভর্তি হইয়াছিলেন । ক্রমশঃ সেনাপতির নিকট কৃতিত্ত্বের পরিচয় প্ৰদানপূর্বক বিশ্বাসভাজন হইয়াছিলেন। অবশেষে সেনাপতি ইহার দলভুক্ত লোকের উপরেই তারার শিবির রক্ষার ভাৱ সমৰ্পণ করিয়াছিলেন। সেই সুযোগে মালোজী ঔষধ প্রয়োলে তারাকে বেইস করিয়া গভীর নিশীথে হরণ করিয়া লইবার সুবিধা পাইয়াছিলেন। মালোজীর চতুরী এবং কৌশলে সকলেই ধন্য ধন্য করিতে লাগিলেন। মারাঠীদিগের চতুৰ্ম্ম এবং ধূৰ্ততা সম্বন্ধে এতদিন যােহাৱা অবিশ্বাসী ছিল, আজ তাহারাও মুক্তকণ্ঠে প্ৰশংসা কীর্তন করিতে লাগিল। তারাবাঈয়ের অপহরণে Vy