পাতা:সিরাজী উপন্যাস সমগ্র.pdf/২২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন্ধ্যার কিছু পরে-তরল অন্ধকার কিছু ঘনীভূত হইলে আবার ধন লুণ্ঠন ব্যাপার দ্রুতবেগে চলিতে লাগিল। সমস্ত রাত্রিতে প্ৰাণপণ চেষ্টা করিয়া পাতালপুরীর সমস্ত ধনরত্নই নজীব-উদ্দৌলার লোকেরা কিশতীতে লইয়া গেল। একজন তেজস্বী সৈনিক পুরুষ মারাঠী দাসু্যগণকে প্রাণদণ্ডের তীতি প্ৰদৰ্শন করায় তাদের খাজাখী বলিল যে, তাহাদিগের প্রাণদান করিলে সে আরও একটি অর্থভাণ্ডার, দেখাইয়া দিতে প্ৰকৃত আছে। অতঃপর তাহাদিগকে প্ৰাণদানের প্রতিশ্রুতি দিবার পরে তাহার কক্ষের মেজের একখানি পাথর তুলিয়া ফেলিলে তন্নিয়ে একটি কক্ষ বাহির হইয়া পড়িল। সেই কক্ষে ঘূপীকৃত টাকা দেখিয়া সকলেই বিম্বিত হইল। নজীব-উদ্দৌলা সাতখানি নীেকায় সাতজন প্রহরী রাখিয়া সমন্ত মাঝি-মাল্লা লইয়া সেই অর্থ নীেকায় বহন করিতে লাগিলেন। সর্বতন্তু ৮৫ জন লোক অৰ্থ বহনে কঠোর পরিশ্রম করিতে লাগিল। নজীব-উদ্দৌলা গুহামুখে ৩ জন মাত্র অনুচরসহ চৌকিতে ব্যাপৃত থাকিলেন। অদ্য দিবসেও অর্থলুণ্ঠন এবং বহনকাৰ্য চলিতে লাগিল। বেলা যখন অর্ধপ্রহর তখন দেখা গেল যে, একদল মারাঠী সৈনিক সেই পাতালপুরীর দিকে অগ্রসর হইতেছে। তাহদের সঙ্গে অনেকগুলি টাকার তোড়াও দেখা গেল। দসু্যগণ সংখ্যায় ১৫ জন। দসু্যদের সংখ্যাধিক্য দেখিয়া নজীব-উদ্দৌলা দ্বার বন্ধ করিয়া কিয়ৎক্ষণ অপেক্ষা করিবার পরে যখন দাসুদের কেহই আর উপরে আসিল না, তখন অনৰ্থক অনুচিত বিলম্ব বিবেচনায় পাথর তুলিয়া সুড়ঙ্গে প্রবেশের চেষ্টায় হাতল ধরিয়া টান দিতেই লোহার ছিন্ন শিকল সহ হাতল বৃক্ষের গহবর হইতে একেবারেই খসিয়া পড়িল। নাজীব-উদ্দৌলা বুঝিলেন যে, দসু্যরা আর উত্তোলন করিবার.কল হইতে শিকল কাটিয়া দিয়াছে। এক্ষণে বলপূর্বক এই গুরুভার প্ৰান্তৱকে না সৱাইলে ভিতরে প্রবেশ করিবার আর কোনও উপায় নাই । মুসলমানগণ নিরুপায় হইয়া তখন বলপূর্বক সেই প্রস্তরখণ্ডকে ১৫ জনে ছিলেন যে, মারাঠিগণ। সুড়ঙ্গে অবতরণমূখেই বাধা দিবে, কিন্তু তাহারা সেই গুপ্তপুরীর ভিতয়ে নামিয়া একটি লোকেরও নিদর্শন পাইলেন না। পূর্বে মারাঠিগণকে দৃঢ়ৰূপে হাত-পা বঁধিয়া যে-ঘরে বন্ধ রাখা হইয়াছিল, সে ঘরে