পাতা:সিরাজী উপন্যাস সমগ্র.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তিনি বীরপুরুষ হইলেও একাকী কি করিতে পারেন! তাঁহাকে ধরিতে পারলে প্রতাপাদিত্য যে হাত-পা বঁধিয়া জুলন্ত চিতায় দগ্ধ করবেন, সে-বিষয়ে কিছুমাত্র সন্দেহ নাই। সুতরাং তিনি মানুয়াদিগকে খুব দ্রুত নৌকা বাহিতে আদেশ করিলেন। খাঁ সাহেব যে প্রতাপাদিত্যের রাজ্য ত্যাগ করিয়া যাইতেছেন, মাঝিমাল্লারা অবশ্য তাহা জানিত না। তাহাদের জানিবার কথাও ছিল না। তাহারা জানিলে অবশ্য আসিত না। কারণ এইরূপ কার্যে প্রতাপাদিত্য যে তাহদের শরীরের চর্ম ছাড়াইয়া তাহাতে লবণ মাখিয়া দিবেন, তাহা তাহারা বেশ জনিত । সেনাপতি কোন দরকারবশতঃ মনোহরপুরে যাইতেছেন বলিয়া মাঝিরা বিশ্বাস করিতেছিল। মাহতাব খাঁ মনোহরপুরে পহুছিতেই প্রায় সন্ধ্যা হইল। মনোহরপুরে প্রতাপাদিত্যের একখানা বাড়ী ও একটি কাছারি ছিল। এতদ্ব্যতীত সেখানে গোলা ও হাটবাজার দস্তুরমত ছিল। কাছারিতে ১০ জন তবকী অর্থাৎ বন্দুকধারী, ২৫ জন লাঠিয়াল, একজন জমাদার, একজন নায়েব এবং অন্যান্য কর্মচারী ১০/১২ জন ছিল। প্রতাপাদিত্যের স্ত্রীর সংখ্যা চল্লিশেরও উপর ছিল । এতদ্ব্যতীত উপপত্নীও যথেষ্ট ছিল। মনোহরপুরে চতুর্থ রাণী দুৰ্গাবতী বাস করিতেছেন। তিনি পূর্বে যশোরের প্রাসাদের অধিবাসিনী ছিলেন। কিন্তু ক্ৰমে সন্তানাদি হওয়ায় তাহার যৌবনে ভাটা ধরিলে প্রতাপাদিত্যের মন-মধুকর যখন দুৰ্গাবতীকে কিঞ্চিৎ নীরস বলিয়া মনে করিল, তখন মনোহরপুরের ক্ষুদ্র বাটীতে তাঁহাকে সরাইবার ব্যবস্থা হইল। তদ্ব্যতীত প্রতাপাদিত্য আরও একটি কারণে দুৰ্গাবতীতে নির্বাসিত করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। দুৰ্গাবতী অত্যন্ত মুখরা ছিলেন, একবার রাগিয়া LBBB DBD DDBD DBBDBBBB BDBBDBDB D DDL DD SS DBBD DDD সৰ্বতোভাবে নিঃশঙ্ক ও নিঃসঙ্কোচ ছিল । তাহার তীব্র সমালোচনা এবং বিদ্রুপবাণে প্রাসাদবাসিনী অন্যান্য রাণীরা অস্থির থাকিতেন। তিনি প্রতাপাদিত্যকেও অতি সামান্যই গ্রাহ্য করিতেন। দুৰ্গাবতী তাঁহার পরবতী রাণীদিগকে আপনার ক্রীতদাসী অপেক্ষাও তাচ্ছিল্য করতেন। প্রতাপাদিত্য অবশেষে এই দারুণ সঙ্কট হইতে মুক্ত হইবার জন্য তাঁহাকে মনোহরপুরে নির্বাসিত করিয়াছিলেন। দুৰ্গাবতী মনোহরপুরে আসিয়া প্রাসাদের নিত্য ব্যভিচার, অত্যাচার ও হত্যাদূষিত বিষাক্ত বায়ু হইতে হােফ ছাড়িয়া বাঁচিয়াছিলেন। প্রতাপাদিত্য বৎসরের কোনও সময় এদিকে আসিলে দুৰ্গাবতীর মন্দিরে অবশ্যই পদধূলি পড়িত। নতুবা তাহাকে একপ্রকার বৈধব্য জীবনই কাটাইতে হইত। এই দুৰ্গাবতীর সময়েই মাহতাব খ্যা যশোরের রাজপুরীতে প্ৰবেশ এবং নিজের বীরত্ব ও বিশ্বস্ততার পরিচয় দিয়া প্ৰধান সেনাপতির পদ লাভ করেন । সে আজ দশ বৎসরের কথা । যশোরের অন্তঃপুরে তখন দুৰ্গাবতীর একাধিপত্য। দুৰ্গাবতীর যৌবনের সুবর্ণ শৃঙ্খলে প্রতাপাদিত্য তখন দুশোচ্ছদ্যভাবে পোষা কুকুরের ন্যায় বাধা ছিলেন। 86ሎ