পাতা:সীমান্ত গান্ধী - সুকুমার রায়.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সীমান্ত গান্ধী

বাস্তবে রূপান্তরিত করিয়াছেন তাহা চিন্তা করিলে বিস্ময়ে স্তম্ভিত হইতে হয়। স্বদেশবাসীর শিক্ষা, রাজনৈতিক ও সমাজজীবন সংগঠনকল্পে তিনি যে শ্রম ও ত্যাগ-স্বীকার করিয়াছেন, মানব-ইতিহাসে তাহার দৃষ্টান্ত বিরল। গফুর খানের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ডাঃ খান সাহেব ও তাহাদের পিতা বৈরাম খানও পুত্রের সহিত একই উদ্দেশ্য-সাধনে উদ্বোধিত হইয়া স্বদেশের সেবাকে জীবনের ব্রতরূপে গ্রহণ করেন। তাঁহাদের জীবনও দেশের জন্য অকুণ্ঠ ত্যাগস্বীকার, নিষ্পেষণভোগ ও কারাবরণের জীবন। পাঠানদের মধ্যে জাতীয় ও রাজনৈতিক চেতনার উদ্বোধনের মূলে এই খান-পরিবারের দান ঠিক কতখানি, ইতিহাস তাহা নির্ণয় করিবে। তবে একথা আজ নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, খান-ভ্রাতৃদ্বয়ের প্রচেষ্টার ফলেই আজ পাঠানজাতি ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের পতাকাতলে সমবেত হইয়া ভারতের অন্যান্য প্রদেশের রাজনৈতিক ভাগ্যের সহিত সীমান্ত প্রদেশের রাজনৈতিক ভাগ্যকে একসূত্রে গ্রথিত করিয়াছে।

 আবদুল গফুর খান যে সময় জন্মগ্রহণ করেন তখন পৃথিবীর বুকে এক বিরাট পরিবর্তনের সূচনা দেখা দিয়াছে। ইউরোপ ও আমেরিকায় যেমন একদিকে ধনতন্ত্রবাদ চরম পরিণতি লাভ করিয়াছিল, তেমনি অন্যদিকে ব্রিটেন ক্রমে গণতন্ত্রের প্রতি ঝুঁকিয়া পড়িতেছিল। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও জাতির মধ্যে কিন্তু সাম্রাজ্য-লিপ্সা ও তজ্জনিত বৈরীভাব পুরাপুরিই বজায় ছিল।

 এদিকে ভারতবর্ষ ও আফগানিস্থানের মধ্যে সেই সময় হইতে সীমানির্দেশের কার্য শুরু হয়। শিক্ষিত সম্প্রদায় তখনও ১৮৭৮ খ্রীষ্টাব্দের আফগান যুদ্ধ ও ভারতের উপর তাহার