হয়েছে শুনে নির্ভয় হলাম। ও চিঠির উত্তর না-পাওয়া আমায় বিচলিত করে নি, যেহেতু ঐ চিঠিটার উত্তর দেবার মতো মূল্য ছিল না। আমার খবর আমি এক কথায় জানাচ্ছি—পরিবর্তনহীনভাবে রাজনীতি নিয়ে কালক্ষয় করছি। তোরা একটা ‘পত্রিকা'১৯ বার করছিস। ভাল কথা। কিন্তু প্রশ্ন এই, হাতের-লেখা পত্রিকা বার করবার মতো মনের অপরিপক্বতা তোর আজো আছে? কথাটা নীরস হলেও একথা বলবই যে, এই ধরনের ‘খই ভাজায়’ এই দুর্দিনে কাগজ ও সময় নষ্ট করা ছাড়া আর কিছুই হবে না। নিজের সম্বন্ধে তোর সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হচ্ছে, নিজেকে নানাভাবে সৎশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা এবং সেইজন্যে পত্রপাঠ কলকাতায় এসে বাবার সাহায্য নেওয়া। কথাটা গুরুমশাইয়ের উপদেশ অথবা বাবার নিবেদনের মতো তিক্ত ও অনাবশ্যক বলে মনে হতে পারে, কিন্তু কথাটা সত্যি। কথাটার তাৎপর্য আমি মর্মে-মর্মে অনুভব করছি এবং যথাসাধ্য সে সম্বন্ধে চেষ্টা ও আয়োজন করছি। অতএব আমার কথাটা ভাল করে ভেবে দেখবার জন্যে অনুরোধ জানাচ্ছি। আশা করি, মা এবং ভাই-বোন সহ তুই ভাল আছিস; তোর প্রীতি প্রাপ্তরা ভাল আছে, চিঠির উত্তর চাই না।
পাতা:সুকান্ত সমগ্র.djvu/৩০৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
—সুকান্ত ভট্টাচার্য।
২৯৭
সমগ্র—১৮