পাতা:সুকান্ত সমগ্র.djvu/৩০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তেরো

 চিঠিটার উত্তর দিতে বেশ একটু দেরি হল, বোধহয় কুড়ি-বাইশ দিন, কিন্তু সেজন্যে আমি এতটুকু দুঃখিত নই—যেহেতু আর্থিক প্রতিকূলতা (শুধু অর্থনৈতিক অরাজকতার জন্যে নয়, পারিবারিক আভ্যন্তরীণ গোলযোগের দরুন) ভীষণভাবে আক্রমণ করেছে আমাকে, এমন কি আমার ভবিষ্যৎকে পর্যন্ত। অবিশ্যি আর কিছু পরিবর্তন পরিবারের আর কোথাও হয় নি, কেবল আমার পৃথিবীতেই দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। বেশ স্কুলে যাচ্ছিলাম, রাজনীতির চর্চা করছিলাম, এমন সময় এল কালবৈশাখীর মতো বিনা নোটিশে এক ঝড়, যা আমার চোখে ধুলো ছিটিয়ে দিল, আমি বিভ্রান্ত হয়ে পড়লাম, আর সে বিভ্রান্তির ঘোর এখনো কাটে নি। যাক, চিঠির প্রথমেই করুণ রসের অবতারণা করা অরসিকের পরিচয়। আমার অবস্থা অনেকটা কবি বলে যে গল্পটা লিখেছিলাম সেই গল্পটার নায়কের মতো হয়েছে, আশা করি এ দুদিন দূরীভূত হবে।

 সম্পাদনার জন্যে তোর চেয়ে যোগ্য লোক আছে কিনা, তোদের বর্তমান যশোরে, (অর্থাৎ যেখানে অরুণ মিত্র, সরোজ দত্ত২৩ উপস্থিত নেই) এ প্রশ্ন তুলে তোকে আঘাত দিয়েছি জেনে আমিও প্রত্যাঘাত পেলাম। তোর ভুল বোঝবার এই অপচেষ্টা দেখে আমার জ্ঞানচক্ষু উন্মেষিত হল। আমার উচিত ছিল মনোজ বসু কোন ছার, মাইকেলকে স্মরণ করা। তারা ‘ত্রিদিব’ সম্পাদনা করতে পারুন, আর নাই পারুন, জন্ম তো নিয়েছেন যশোহরে।

 ভাল কথা, এর আগে যে চিঠিটা তোর বাবার চিঠির সঙ্গে গেছে সেটা অনেকটা ফজলুল হকের মতোই বলপ্রয়োগে বাধ্য হয়ে লেখা, সুতরাং তার রসহীনতায় ক্ষুব্ধ হ’স নি। তবে চিঠির কথাগুলো অত্যন্ত সার কথা, একবার ভাল করে ভেবে দেখিস।

 আর গল্প বা প্রবন্ধ সম্বন্ধে কথা হচ্ছে যে, ওগুলো অন্তত এখন

৩০১