আসছে, তার এক হাতে কুলপিবরফ আর-এক হাতে সাজিমাটি, আর লোকটা কুলপি খেতে গিয়ে ভুলে সাজিমাটি খেয়ে ফেলেছে—হোঃ হোঃ, হোঃ হো, হাঃ হাঃ হাঃ হা—” আবার হাসির পালা।
আমি বললাম, “কেন তুমি এই-সব অসম্ভব কথা ভেবে খামকা হেসে-হেসে কষ্ট পাচ্ছ?”
সে বলল, “না, না, সব কি আর অসম্ভব? মনে কর, একজন লোক টিকটিকি পোষে, রোজ তাদের নাইয়ে খাইয়ে শুকোতে দেয়, একদিন একটা রমিছাগল এসে সব টিকটিকি খেয়ে ফেলেছে—হোঃ হোঃ হোঃ হো—”
জন্তটার রকম-সকম দেখে আমার ভারি অদ্ভুত লাগল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “তুমি কে? তোমার নাম কি?”
সে খানিকক্ষণ ভেবে বলল, “আমার নাম হিজি বিজ্ বিজ্। আমার নাম হিজি বিজ্ বিজ্, আমার ভায়ের নাম হিজি বিজ্ বিজ্, আমার বাবার নাম হিজি বিজ্ বিজ্, আমার পিসের নাম হিজি বিজ্ বিজ্—”
আমি বললাম, “তার চেয়ে সোজা বললেই হয় তোমার গুষ্টিসুদ্ধ সবাই হিজি বিজ্ বিজ্।”
সে আবার খানিক ভেবে বলল, “তা তো নয়, আমার নাম তকাই! আমার মামার নাম তকাই, আমার খুড়োর নাম তকাই, আমার মেসোর নাম তকাই, আমার শ্বশুরের নাম তকাই—”
আমি ধমক দিয়ে বললাম, “সত্যি বলছ? না, বানিয়ে?”
জন্তুটা কেমন থতমত খেয়ে বলল, “না, না, আমার শ্বশুরের নাম বিস্কুট।”
আমার ভয়ানক রাগ হল, তেড়ে বললাম, “একটা কথাও বিশ্বাস করি না।”
অমনি কথা নেই বার্তা নেই, ঝোপের আড়াল থেকে একটা মস্ত দাড়িওয়ালা ছাগল হঠাৎ উঁকি মেরে জিজ্ঞাসা করল, “আমার কথা হচ্ছে বুঝি?”
আমি বলতে যাচ্ছিলাম ‘না’ কিন্তু কিছু না-বলতেই তড়্ তড়্ করে সে বলে যেতে লাগল, “তা তোমরা যতই তর্ক কর, এমন অনেক জিনিস আছে যা ছাগলে খায় না। তাই আমি একটা বক্তৃতা দিতে চাই, তার বিষয় হচ্ছে—ছাগলে কি না খায়।” এই বলে সে হঠাৎ এগিয়ে এসে বক্তৃতা আরম্ভ করল—
“হে বালকবৃন্দ এবং স্নেহের হিজি বিজ্ বিজ্, আমার গলায় ঝোলানো সার্টিফিকেট দেখেই তোমরা বুঝতে পারছ যে আমার নাম শ্রীব্যাকরণ শিং বি. এ. খাদ্যবিশারদ। আমি খুব চমৎকার ব্যা করতে পারি, তাই আমার নাম ব্যাকরণ, আর শিং তো দেখতেই পাচ্ছ। ইংরাজিতে লিখবার সময় লিখি B. A. অর্থাৎ ব্যা। কোন-কোন জিনিস খাওয়া যায় আর কোনটা-কোনটা খাওয়া যায় না, তা আমি সব নিজে পরীক্ষা করে দেখেছি, তাই আমার উপাধি হচ্ছে খাদ্যবিশারদ। তোমরা যে বল—পাগলে কি না বলে, ছাগলে কি না খায়—এটা অত্যন্ত অন্যায়। এই তো একটু আগে ঐ হতভাগাটা বলছিল যে রামছাগল টিকটিকি খায়। এটা এক্কেবারে সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমি অনেকরকম টিকটিকি চেটে