পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
জানোয়ারের ঘুম

এক একজন মানুষের ঘুমাইবার ধরন দেখি এক একরকম। কেউ চুপচাপ নিরীহভাবে জড়োসড়ো হইয়া ঘুমায়, কেউ ঘুমের মধ্যে হাত পা ছড়িয়া এপাশ-ওপাশ করিয়া অস্থির হয়, কেউ বা তুমল নাসিকাগর্জনে রীতিমত যুদ্ধের কোলাহল সৃষ্টি করিয়া তোলে। মাঝে মাঝে এক একজন লোক দেখি, তাহাদের আর কোন ক্ষমতা থাক বা নাই থাক ঘুমাইবার শক্তিটা খুব অসাধারণ। যেখানে সেখানে উঠিতে-বসিতে তাহারা বেশ একটু ঘুমাইয়া নয়। পাখা-কুলি পাখা টানিতে টানিতে ঘুমাইয়া পড়ে, পণ্ডিতমহাশয় পড়াইতে পড়াইতে ঢুলতে থাকেন, আর ছোট ছোট ছেলেরা গল্প শুনিতে শনিতে ঘুমের ঘোরেই হু ঁহু ঁকরিতে থাকে। যুদ্ধের সময়ে ক্রমাগত কয়েকদিন রাত জাগিয়া এবং হয়রান হইয়া সৈন্যেরা যখন শিবিরে ফিরে, তখন অনেক সময়ে দেখা যায় তাহারা চলিতে চলিতেই ঘুমের ঘোরে মাতালের মতো টলিতেছে।

 গল্পে শুনিয়াছিলাম, এক ব্রাহ্মণ পুরোহিত শিষ্যবাড়ি গিয়াছিলেন—শীতের সময়ে। সেখানে পাড়াগাঁয়ে শীতটা কিরকম হয় তাঁহার জানা ছিল না। তাই শিষ্য যখন লেপ দিতে চাহিল তখন তিনি বারণ করিয়া বলিলেন ‘‘আমার শীত-টিত কিছু, লাগে না।” কিন্তু লাগেনা’ বলিলেই ত আর শীত দূর হয় না; কাজেই রাত্রে যখন ঠাণ্ডা বাড়িয়াই চলিল তখন ঠাকুর মহাশয়ের দুরবস্থা কেমন হইয়াছিল, শিষ্য তাহার বর্ণনা দিয়াছেন অতি চমৎকার

174