পাতা:সুনির্মল বসুর শ্রেষ্ঠ কবিতা.pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
সুনির্মল বসুর

চিকন কলার পাতায় পাতায় আলো ঢল ঢল পিছ্‌লে যায়-
তাই তাড়াতাড়ি সাঁতারি’ সাঁতারি’ কাড়াকাড়ি করে সব পাতায়।
কাঁথায় জড়ানো ঝিয়ের মেয়েটা ঢুলে ঢুলে পড়ে আঙিনাতে,—
ওরো বুঝি আজ আবেশ লেগেছে, ঘুম ছেয়ে আসে আঁখি-পাতে।
বড়দা ও-ঘরে কি জানি কি লেখে, ছোড়দা দেখিছে ছবির বই,
সেজদা দাওয়ায় গান গায় ব'সে—মেজদা এখনো ফেরে নি কই!

মা ব’সে রাঁধেন খিচুড়ি ও ভাজা, বুবুদিদি ভাজে আলুর চপ,
ঠান্‌দি ওদিকে মালা নিয়ে বসে-ইষ্টদেবের করেন জপ।
চাঁদার আমেজে বাঁধা প'ড়ে গেছে—ধাঁধায় পড়েছে উমাটা আজ,
তাই সে লাফায় “আয়, আয়, আয়,”—পউষের হিমে, সারাটা সাঁঝ,
“আধা-আধি চাঁদা উঠেছে এবার-মামার যে আজ গায়ে-হলুদ,—
ও মা, ছুটে এসো,—যাও, না-ই এলে, কক্ষনো আর খাব না দুধ!”
ঝিমি ঝিমি সাঁঝে ঝিঁঝির আসরে ঝিমি ঝিমি ঝিমি বাজে সেতার-
“লক্ষ্মীটি দিদি, আয় আয় আয়”-উমা ডেকে বলে দিদিরে তার॥

কৃষ্ণা-তিথির সন্ধ্যা

আমলকি-বন ধারে ধারে
বাতাস চলে বারে বারে,
বন-মেহেদীর ঝাড়ে-ঝাড়ে জোনাক জ্বালে দীপ;
এই, থেমে যাও নদীর পাশে,—
কৃষ্ণা-তিথির সন্ধ্যা আসে,
তাকিয়ে দেখ ঐ আকাশে-সন্ধ্যা-তারার টিপ।
থামো, থামো-একটু রোসো
বালুর চরে একটু বোসো
ভাই;
তাড়াতাড়ি বাড়ি যাবার একটু তাড়া নাই!