পাতা:সুনির্মল বসুর শ্রেষ্ঠ কবিতা.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

শ্রেষ্ঠ কবিতা
১২৯

অপরূপ-কথা

এক যে ছিল রাজার ছেলে, তার ছিল এক তলোয়ার,
ধার ছিল না একটুও তার, তোমরা যতই বলো আর;
সেই তলোয়ার ঘুরিয়ে
রঙিন নিশান উড়িয়ে,
ঠ্যাং-খোঁড়া এক ঘোড়ায় চ’ড়ে চলত কুমার হুঁশিয়ার,
অবাধ, স্বাধীন ঘোরার নেশায়—মনটা হ’ত খুশি তার।

উধাও হয়ে ছুটত ঘোড়া,— কোথাও যেতে মানা নাই,
পঙক্ষীরাজের সামিল সে যে, কিন্তু পিঠে ডানা নাই;
গ্রীষ্ম, বাদল, কি শীতে,
সকাল দুপুর নিশীথে,
খেয়াল-মত চলত কুমার যেথায় খুশি অনিবার,
মানত না সে ত্র্যহস্পর্শ, বারবেলা কি শনিবার।

একদিন এক জ্যোৎস্না-রাতে—চাঁদ ওঠে নি আকাশেই,
ধু-ধু করে তেপান্তরের প্রান্তখানি ফাঁকা সেই;
কী দেখেছে স্বপনে,
রাজার কুমার গোপনে
গহন রাতে ছাড়ল পুরী, কেউ পেলে না দিশা হায়,
হু-হু ক’রে ছুটল ঘোড়া রাজকুমারের ইশারায়।

রাজার কুমার শ্রান্ত যবে হাজার যোজন চলাতে,
থামল এসে অচিন দেশে প্রাচীন অশথ-তলাতে;
সেই অশথের বুকেতে
বসত করে সুখেতে
ব্যাঙ্গমা আর ব্যাঙ্গমীরা, সাত সাগরের সীমানায়।
বললে, “ছি, ছি, রাজকুমারে গাছের তলে কি মানায়?”