পাতা:সুসন্তান লাভের উপায়.pdf/২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা । বর্তমান সময়ে এ দেশের অধিকাংশ বিজ্ঞজনেরই জাতীয় উন্নতির দিকে বিশেষ দৃষ্টি পতিত হইয়াছে। এই স্বসময়ে জাতীয়-অবনতির কারণগুলি তন্ন তন্ন করিয়৷ পয্যালোচনপূর্বক তাহার প্রতিকার-কল্পে যত্নবান হওয়া প্রত্যেক ব্যক্তিরই একান্তকৰ্ত্তব্য । আমাদের জাতীয়-অবনতির কারণ অনেক ; তন্মধ্যে আমাদের বংশধরগণ যে দিন দিন স্বাস্থ্যহীন, চরিত্রহীন ও প্রতিভাহীন হইয়া পড়িতেছে, ইহাই সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রধান ও গুরুতর চিপ্তার বিষয়। অনেকের ধারণা এই যে, শৈশবকাল হইতেই উপযুক্ত সুশিক্ষা ও সৎসংসর্গ পাইলে ও স্বাস্থ্যরক্ষার নিয়মগুলি পালন করিলে, শিশু সৰ্ব্ববিষয়ে উন্নতি লাভ করিতে পারে। কিন্তু আমাদের আধ্য মহর্ষিগণ, আয়ুৰ্ব্বেদ-শাস্ত্রকারগণ ও বৰ্ত্তমান পাশ্চাত্য চিকিৎসা-বিজ্ঞান-বিং পণ্ডিতগণ একবাক্যে দৃঢ়তার সহিত বলেন যে, ক্রণ-সঞ্চারের সময়ে ও জরায়ুজীবনেই শিশুর সর্বববিধ শারীরিক, মানসিক উন্নতির বা অবনতির এবং পীড়ার বীজ অঙ্কুরিত হয়। ফলতঃ মাতাপিত বাল্যকাল হইতে অতি কঠোর নিয়ম, নিষ্ঠা, সংযম অর্থাৎ ব্রহ্মচয্য পালন না করিলে, কিছুতেই তাহদের সন্তান শারীরিক, মানসিক ও অধ্যাত্মিক জীবনে উন্নতিলাভ করিতে পারে না । আমাদের শাস্ত্র ও পুরাণাদিতে এই কথা পুনঃ পুন: উল্লেখিত হইয়াছে। মহাভারতের বনপর্বে লিখিত আছে যে, মহারাজ অথপতি ও উtহার ধৰ্ম্ম-পত্নী সুসস্তান লাভের জন্য অষ্টাদশ বৎসর কাল অতি কঠোর নিয়ম পালন করিয়াছিলেন :– “অপত্যোৎপাদনার্থঞ্চ তীব্রং নিয়মমাস্থিতঃ । কালে নিয়মিতাহারো ব্রহ্মচারী জিতেন্দ্রিয়ঃ ॥” “অর্থাৎ অপত্য উৎপাদনার্থ মিতাঙ্গারা, ব্রহ্মচারী ও জিতেন্দ্রিয় হইয়া অতি কঠোর নিয়ম অবলম্বন করিলেন ।” এইরূপ অষ্টাদশ বৎসর কাল বিশুদ্ধ ব্রহ্মচৰ্য্য, দম, নিয়ম, সম্পূর্ণ যত্ন ও ভক্তির ফলেই মহারাজ অগ্ৰপতি বরলাভ করিয়াছিলেন । বলা বাহুল্য, সেই বরের ফলস্বরূপ প্রাতঃস্মরগীয়া পুণ্যবতী সাবিত্রীদেবী জন্মগ্রহণ করিয়া এই ভারতভূমি পবিত্র করিয়া গিয়াছেন। প্রাচীন কালে প্রায় সকলেষ্ট সু সস্তান লাভের জন্ত ব্রহ্মচৰ্য্যাদি নানাবিধ নিয়ম পালন করিতেন । কিন্তু বৰ্ত্তমান সময়ে আমাদের দেশের অধিকাংশ ব্যক্তি ঐ সমস্ত নিয়মগুলির উপেক্ষা করাতে সমাজের যে ঘোরতর অনিষ্ট হইতেছে, তাহ বিশেষ চিন্তার বিষয় বটে। ইতর প্রাণীরাও সস্তানোৎপাদনের জন্য প্রাকৃতিক নিয়মের অধীন হইয়। চলিয়া থাকে, আর জীবশ্রেষ্ঠ মানবগণ ইহাত উপেক্ষা করিতেছেন— ইহ অতীব দুঃখের ও লজ্জার কথা । বলা বাহুল্য, এই অবহেলার ফলেই আমাদের ংশধরগণের ঈদৃশ শোচনীয় দুর্দশা ঘটিতেছে। কুলস্থান লাভের জন্ত প্রাচীন মহাত্মারা যে সকল নিয়ম পালন করিতেন, আমরা এই ক্ষুদ্র গ্রন্থে তাহাই অতি সংক্ষেপে উল্লেখ করিলাম। ভরসা করি, এ দেশের পুত্যেকেই এই গ্রন্থখানি একবার পাঠ করিয়া দেখিবেন ও যথাসাধ্য ঐ সকল নিয়ম পলিঙ্গ করিতে যত্ন ও চেষ্টা করিবেন । । বিক্রমপুর R 3. মুন্সীগঞ্জ পো-ঢাকা । গ্রন্থকার ।