পাতা:সেঁজুতি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সেঁজুতি

এইটুকুতে চোখ বুলিয়ে আবার চলি ছুটে,
এক মুহূর্তে গ্রামের ছবি ঝাপসা হয়ে উঠে।


ঐ না-জানা গ্রামের প্রান্তে সকাল বেলায় পুবে
সূর্য ওঠে, সন্ধ্যে বেলায় পশ্চিমে যায় ডুবে।
দিনের সকল কাজে,
স্বপ্নদেখা রাতের নিদ্রামাঝে,
ঐ ঘরে, ঐ মাঠে,
ঐখানে জল-আনার পথে ভিজে পায়ের ঘাটে,
পাখিডাকা ঐ গ্রামেরি প্রাতে,
ঐ গ্রামেরি দিনের অন্তে স্তিমিত-দীপ রাতে
তরঙ্গিত দুঃখসুখের নিত্য ওঠা-নাবা,
কোনোটা বা গোপন মনে, বাইরে কোনোটা বা।
তা’রা যদি তুলত ধ্বনি, তাদের দীপ্ত শিখা
ঐ আকাশে লিখত যদি লিখা,
রাত্রিদিনকে কাঁদিয়ে-তোলা ব্যাকুল প্রাণের ব্যথা
পেত যদি ভাষার উদ্বেলতা,
তবে হোথায় দেখা দিত পাথর-ভাঙা স্রোতে
মানব-চিত্ত তুঙ্গ-শিখর হতে
সাগর-খোঁজা নির্ঝর সেই, গর্জিয়া নর্তিয়া
ছুটছে যাহা নিত্যকালের বক্ষে আবর্তিয়া
কান্নাহাসির পাকে,

৩৯