পাতা:সেঁজুতি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সেঁজুতি

দাও না ছেড়ে ওকে
স্নিগ্ধ আলো শ্যামল ছায়া বিরল কথার লোকে,
বেড়াবিহীন বিরাট ধূলি’পর,
সেই যেখানে মহাশিশুর আদিম খেলাঘর।


ভোরবেলাকার পাখির ডাকে প্রথম খেয়া এসে
ঠেকল যখন সব প্রথমের চেনাশোনার দেশে;
নাম্‌ল ঘাটে যখন তারে সাজ রাখে নি ঢেকে,
ছুটির আলো নগ্ন গায়ে লাগ্‌ল আকাশ থেকে,
যেমন ক’রে লাগে তরীর পালে,
যেমন লাগে অশোক গাছের কচি পাতার ডালে।
নাম-ভোলা ফুল ফুটল ঘাসে ঘাসে
সেই প্রভাতের সহজ অবকাশে।
ছুটির যজ্ঞে পুষ্পহোমে জাগল বকুলশাখা,
ছুটির শূন্যে ফাগুনবেলা মেল্‌ল সোনার পাখা।


ছুটির কোণে গোপনে তার নাম
আচম্‌কা সেই পেয়েছিল মিষ্টি সুরের দাম;
কানে কানে সে নাম-ডাকার ব্যথা উদাস করে
চৈত্রদিনের স্তব্ধ দুই প্রহরে।
আজ সবুজ এই বনের পাতায় আলোর ঝিকিমিকি
সেই নিমেষের তারিখ দিল লিখি’।

৪৭