[ »৬ ] এক্ষণকার লোক পান ও পূর্বাপেক্ষ অধিকতর বেশ্বাসক্ত । মদ্যপান যে আমাদের বর্তমান সমাজে অতি ভীষণ অনিষ্টপাতের কারণ হইয়াছে, তাহার সন্দেহ নাই । অনেকে বলেন, পরিমিত মদ্যপানে দোষ নাই। কিন্তু ইহা যে কুদৃষ্টান্ত স্বরূপ হইয়া কত অনিষ্ট সাধন করে, তাহার অন্ত নাই । পিতা কিম্বা শিক্ষক পরিমিত মদ্যপায়ী হইলেও বাবা কিম্বা মাষ্টার মদ খান ত আমি খাব না কেন, এইরূপ বিবেচনা করিয়া যুবকের মদ্যপানে প্রবৃত্ত হয় । কিন্তু তিনি যে পরিমিতরূপ পান করেন, তাহা বিবেচনা না করিয়া আশু অপরিমিত পানে প্রবৃত্ত হয় । এ বিষয়ে বাবা ও মাষ্টারেরও অধিক দিন সাবধান থাকা কঠিন। তাহারাও অধিক দিন মিতপায়ী থাকিতে পারেন না । পরিমিত মদ্যপান কেমন, না,—বাধে একটা ছিদ্র রাখা । সেই ছিদ্র দিয়া জল প্রবেশ করিয়া ক্রমে বাধ যেমন নষ্ট করে, সেইরূপ পানদোষ পরিমিত পানরূপ ছিদ্র দিয়া প্রবেশ করিয়া ক্রমশঃ বুদ্ধি হইয়া পরিণ শেষে মনুষ্যের সর্বনাশ করে। আমি শুনিয়া আহ্নলাদিত হইলাম, যে পূৰ্ব্বে কলেজের ছাত্রেরা এই দোষে যেরূপ লিপ্ত ছিলেন এক্ষণকার ছাত্রেরা সেরূপ লিপ্ত নহেন । যেমন পানদোষ বৃদ্ধি । পাইতেছে তেমনি বেশ্বাগমনও বৃদ্ধি হইতেছে। সে কালে লোকে প্রকাশ্ব্যরূপে বেশ্য রাখিত । বেশ্যা রাখা বাবুগিরির অঙ্গ বলিয়া পরিগণিত হষ্টত ; এক্ষণে তাহা প্রচ্ছন্নভাব ধারণ করিয়াছে, কিন্তু সেই প্রচ্ছন্নভাবে তাহা বিলক্ষণ বৃদ্ধি পাইতেছে। বেশ্যাগমন বৃদ্ধি পাইতেছে, তাহার প্রমাণ বেশ্যাসংখ্যার বৃদ্ধি। পূৰ্ব্বে গ্রামের প্রান্তে দুই এক ঘর বেশ্য দৃষ্ট হইত ; এক্ষণে পল্লিগ্রামে বেশ্যার সংখ্যা বিলক্ষণ বৃদ্ধি পাইতেছে।
পাতা:সেকাল আর একাল.pdf/৭৩
অবয়ব