পাতা:সেক্‌সপিয়র কৃত গ্রন্থ হইতে উদ্ধৃত অপূর্ব্বোপাখ্যান.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কৌতুকাবহ ভ্রম।
২৩

বিবরণ শ্রবণানন্তর তাহাকে অভয় দিয়া এদ্রিয়ানার নিকট তদীয় পতির বৃত্তান্ত আকর্ণন করিবার মানসে মৃদু মধুর বচনে প্রশ্ন করিলেন বৎসে তোমার স্বামির অকস্মাৎ ঈদৃশ রেগাক্রান্ত হইবার কারণ কি? সাগরে তরি নিমগ্ন দ্বারা হঠাৎ কি তাঁহার মহা ক্ষতি হইয়াছে? অথবা পরম প্রণয় ভাজন কোন মিত্রের বিয়োগ জন্য শোকাকুল ছিলেন? এদ্রিয়ানা সবিনয়ে আবেদন করিল না মা এতাদৃশ কোন ঘটনা হয় নাই। তদনন্তর বৃদ্ধা কহিলেন তবে বুঝি তোমার স্বামী তোমাব্যতীত অপর কোন রামার প্রতি আসক্ত আছেন তাহাতেই ঈদৃশী দুর্দশা আপন্ন হইয়াছেন। এদ্রিয়ানা নিবেদন করিল আমি এ প্রকার সন্দেহ করিতাম বটে, আমার স্বামী সর্ব্বদা আবাসে বাস করিতেন না সুতরাং অন্য অঙ্গনার সহিত প্রণয় সম্ভবতে পারে। ফলতঃ তৎপতি জ্যেষ্ঠ আন্তিফোলস্ তদীয় ঈর্ষান্বিত প্রকৃতিতে সাতিশয় বিরক্ত ছিলেন, এবং তন্নিমিত্ত কখন নিজালয় ত্যাগ করত অন্যত্র গিয়া থাকিতেন। বুদ্ধিমতী মঠাধিকারিণীরও মনে তাদৃশ সন্দেহ হইল, অতএব তিনি কহিলেন যদি তোমার কান্ত অনাসক্ত, তবে তাঁহাকে মধ্যে২ ভর্ৎসনা করা উচিত ছিল। এদ্রিয়ানা বলিল অনেক বার করিয়াছি। বর্ষীয়সী বলিলেন বোধ হয় প্রকৃত রূপে তিরস্কার কর নাই। এদ্রিয়ানা স্বীয় প্রিয়তমকে নিরন্তর তিরস্কৃতি করিয়া যে শাসন করিত তাহাতে সেই বর্ষীয়সীর বিশ্বাসাধান নিমিত্ত কহিল এতজ্জন্য আমাদের স্ত্রীপুরুষে দিবানিশ কলহ হইত, নিশীথে স্বামী শয়নগত হইয়া স্বাপাবেশে থাকিলে আমি তাঁহাকে ঐ কথা কহিবার নিমিত্ত নেত্র নিমীলন করিতে দিতাম না, ভোজন সময়ে তদুত্থাপন করিয়া বচসা করিতাম, আর নির্জনে একত্র হইলে ঐ বিষয়ের প্রসঙ্গ ভিন্ন অন্যালাপ ছিলনা, অপিচ সভা মধ্যেও ব্যঙ্গোক্তি করিয়া অনেকবার বিরক্ত করিয়াছি, তথাপি ঘৃণা জন্মে নাই, পরকীয়া রসাস্বাদনাসক্তি ত্যাগ করেন নাই।