পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

 সেইটেই আমার প্রধান গুণ। আপনাকে যারা জানে আমি সেই অসামান্যের দলে।

 মুখ খুলে গেছে, কিন্তু অর নয়, এবার থামো। মাষ্টারমশায়ের কথা হচ্ছিল এখন উঠে পড়ল তোমার নিজের কথা।

 তাতে দোষ হয়েছে কী। বিষয়টা তো উপাদেয়, যাকে বলে ইণ্টারেষ্টিঙ্।

 বিষয়টা সর্ব্বদাই রয়েছে সামনে। তাকে তো স্মরণ করবার দরকার হয় না। তাকে যে ভোলাই শক্ত।

 আচ্ছা, তাহোলে মাষ্টারের একটা বিশেষ পরিচয় দিই তোমাকে। এটা টুঁকে রাখবার যোগ্য। একদিন সন্ধ্যেবেলায় মাষ্টার জনকয়েক লোককে নেমন্তন্ন করেছিল। খবরটা তার মনে আছে কি না জানবার জন্যে সকাল সকাল গেলুম তার বাড়িতে। সেবক কানাইএর সঙ্গে তার যে আলোচনাটা চলছিল, বলি সে কথাটা। কানাই বললে, জগদ্ধাত্রী পূজোর বাজারে গলদা চিংড়ির দাম চড়ে গেছে তাই এনেছি ডিমওয়ালা কাঁকড়া। মাষ্টার ঈষৎ চিন্তিত হয়ে বললে, কাঁকড়া কী হবে। ও বললে, লাউ দিয়ে ঝোল, সে তোফা হবে। আমি বললুম, মাষ্টার, গল্দা চিংড়ির উপর তোমার লোভ ছিল।

 মাষ্টার বললে, ছিল বই কী!

 তাহোলে তো লোভ সম্বরণ করতে হবে।

 তা কেন। লোভটা প্রস্তুত হয়েই আছে তাকে শাণ্ট্ ক’রে চালিয়ে দেব কাঁকড়ার লাইনে।

 দেখছি, তোমাকে বিস্তর শাণ্ট্ করতে হয়।

 মাষ্টার বললে, কঁকড়ার ঝোল তো খেয়েছি অনেকবার। সম্পূর্ণ মন দিইনি। এবার যখন দেখলুম কানাইয়ের জিভে জল এসেছে তখন তার সিক্ত রসনার নির্দ্দেশে খাবার সময় মনটা ঝুঁকে পড়বে কাঁকড়ার দিকে, রসটা

১৩০