পাব বেশি ক’রে। কাঁকড়ার ঝোলটাকে ও যেন লাল পেনসিলে আণ্ডরলাইন্ ক’রে দিলে, ওটাকে ভালো ক’রে মুখস্থ করবার পক্ষে সুবিধে হোলো আমার।
মাষ্টার জিগেস করলে, আঁঠি-বাঁধা ওটা কী এনেছিস। কানাই বললে, সজনের ডাটা। মাষ্টার সগর্বে আমার দিকে চেয়ে বললে, এই দেখো মজা। ও বাজারে যাবার সময় আমার মনে ছিল লাউডগা। ও বাজার থেকে ফিরে এল, আমি পেয়ে গেলুম সজনের ডাটা। হুকুম না করবার এই সুবিধে।
আমি বললুম, সজনের ডাটা না এনে ও যদি আন্ত চিচিঙ্গে।
মাষ্টার জবাব দিলেন, তাহোলে ক্ষণকালের জন্যে ভাবনা করতে হোত। নাম জিনিষটার প্রভাব আছে। চিচিঙ্গে শব্দটা লোভজনক নয়। কিন্তু কানাই যদি ওটা বিশেষ ক’রে বাছাই ক’রে আনত, তাহোলে সংস্কার কাটাবার একটা উপলক্ষ্য হোত। জীবনে সব প্রথমে ভেবে দেখবার সুযোগ হোত। দেখাই যাক্ না; হয়তো আবিষ্কার করতুম, ওটা মন্দ চলে না। চিচিঙে পদার্থটার বিরুদ্ধে অন্ধবিরাগ দূর হয়ে উপভোগ্যের সীমানা বেড়ে যেত। এমনি ক’রেই কাব্যে কবিরা তো নিজের রুচিতে আমাদের রুচির প্রসার বাড়িয়ে দিচ্ছে। সৃষ্টিকে আণ্ডরলাইন করাই তাদের কাজ।
তোমার রুচির প্রসার বাড়াবার কাজে কানাইয়ের আরো এমন হাত আছে।
আছে বই কি। ও না থাকলে পিড়িং শাকে আমি কোনোদিন মনোেযোগই দিতুম না। শব্দটা আমাকে মারত ধাক্কা। সংসারে সংস্কারমুক্তিই তো অধিকারব্যাপ্তি।
সেই মহৎ কাজে আছে তোমার কানাই।
তা মানতে হবে ভাই। ওর ইচ্ছার যোগে আমার ইচ্ছার সঙ্কীর্ণতা ঘুচে যায় প্রতিদিন। আমি একলা থাকলে এমনটা ঘটত না।
১৩১