পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

লিভরের দোষে ভুগে আসছি বারোবছর-খাবার নাম শুনলেই পিত্তি যায় বিগড়ে।

 জিগেস করলেম, খাওয়াটা কী রকম হবে শুনি।

 অত্যন্ত উত্তেজিত হয়ে বলে উঠল, অতি উত্তম, অতি উত্তম, অতি উত্তম। বৌদি আমসত্ত দিয়ে উচ্ছেসিদ্ধ চমৎকার রাঁধে, আর কুলের আঁটি ঢেঁকিতে কুটে তার সঙ্গে দোক্তার জল মিশিয়ে চাট্‌নি—

 ব’লেই নাচ জুড়ে দিল বিলিতি চালে, টিটিটম্‌টম্‌, টিটিটম্‌টম্‌, টিটিটম্‌টম্‌।

 জীবনে কোনদিন নাচিনি—হঠাৎ নাচ পেয়ে গেল, দুজনে হাত ধরাধরি ক’রে নাচতে শুরু ক’রে দিলুম, টিটিটম্‌টম্‌। মনে হলো আশ্চর্য্য আমার ক্ষমতা, যমুনা দিদি যদি দেখ্‌ত তবে বল্‌ত নাচ বটে।

 শেষকালে হাঁপিয়ে উঠে ধপ্‌ ক’রে বসে পড়লুম। বললুম, আহারের ফর্দ্দ যা দিলে একেবারে খাঁটি ভিটামিন। লিভরের পক্ষে অমৃত। কনে দেখতে যাবে তো কনের পরীক্ষা তো চাই।

 একদফা হয়ে গেছে আগেই।

 কী রকম?

 মনে করলুম মিলন হবার আগে মিলের পরীক্ষা চাই। ঠিক কিনা বলো।

 ঠিক তো বটেই। পরীক্ষার প্রণালীটা কী।

 জিগেস করা চাই শোলোক মেলাতে পারো কি না। দূত পাঠিয়েছিলুম ‘রংমশাল’-এর সহ-সম্পাদককে, তিনি আওড়ালেন

সুন্দরী, তুমি কালো কৃষ্টি,-

 বললেন, মিল ক’রে এর জবাব দিতে হবে, পুরো মাপের মিল।

৩১