পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

জমল। চীৎকার করতে লাগলুম, বনমালী, বনমালী। বনমালী ঘরে ঢুকেই পাল্লারামের চেহারা দেখে বাপ-রে মা-রে ব’লে চেঁচাতে চেঁচাতে দৌড় দিলে।

 হঠাৎ মনে পড়ে গেল, বললেম, ‘সে’ গেছে কনের খোঁজ করতে।

 কোথায়।

 মজাদিঘির ধারে বাঁশতলায়। লোকটা বললে,—সেখানে যে আমারি বাড়ি।

 তাহোলে ঠিক হয়েছে। তোমার মেয়ে আছে?

 আছে।

 এইবার তোমার মেয়ের পাত্র জুটল।

 জুটল এখনো বলা যায় না। এই ডাণ্ডা নিয়ে ঘাড়ে ধরে তার বিয়ে দেব, তারপরে বুঝব কন্যাদায় ঘুচল।

 তাহোলে আর দেরি কোরো না। কনে দেখার পরেই বরকে দেখা হয়তত সহজ হবে না।

 সে বল্‌লে, ঠিক কথা।

 একটা ভাঙা বালতি ছিল ঘরের বাইরে। সেটা ফস্ ক’রে তুলে নিলে। জিগেস করলেম, ওটা নিয়ে কী হবে?

 ও বললে, বড়ো রোদ্দুর, টুপির মতো ক’রে পরব।

 ও তো গেল। তখন কাক ডাকছে, ট্রামের শব্দ শুরু হয়েছে। বিছানা থেকে ধড়ফড় ক’রে উঠেই ডাক দিলেম বনমালীকে। জিগেস করলেম, ঘরে কে ঢুকেছিল।

 ও চোখ রগড়ে বললে, দিদিমণির বেড়ালটা।

 এই পর্যন্ত শুনে পুপেদিদি হতাশভাবে বললে, ও কী কথা দাদামশায়, তুমি যে বলছিলে, তুমি নেমন্তন্ন খেতে গিয়েছিলে, তারপরে তোমার ঘরে এসেছিল পাল্লারাম।

৩৯