পাতা:সোক্রাটীস (দ্বিতীয় খণ্ড) - রজনীকান্ত গুহ.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭ম অধ্যায় ] সোেক্রটীসের পূর্ববৰ্ত্তী দার্শনিকগণ y? \S) বস্তুগত্যা আধ্যাত্মিক-প্ৰয়োজন-সম্পাদনই দর্শনশাস্ত্রের মুখ্য ও প্রধান উদ্দেশ্য বা প্রয়োজন। ধৰ্ম্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ, এই চতুৰ্ব্বিধ পুরুষাৰ্থ অর্থাৎ পুরুষ-প্রয়োজনের মধ্যে মুক্তি বা মোক্ষই পরম পুরুষাৰ্থ, ইহা সর্ববাদিসিদ্ধ। মহৰ্ষি কণাদ ও গোতম প্ৰভৃতি অধিকাংশ দৰ্শন-প্ৰণেতাগণ নিঃশ্রেয়স বা মুক্তিই তেঁহাদের দর্শনের প্রয়োজন, ইহা স্পষ্ট ভাষায় বলিয়া গিয়াছেন, তত্ত্বজ্ঞান মুক্তির কারণ, ইহাও তাহারা মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করিয়াছেন।” ( ফেলোশিপের লেকচার, প্রথম বর্ষ, ৬৮ পৃষ্ঠা )। উদ্ধত বাক্যে দুইটী বিষয় লক্ষ্য করিবার আছে। প্রথমতঃ, ভারতীয় দর্শন আধ্যাত্মিক শাস্ত্ৰ। আদি যুগের গ্ৰীক দৰ্শন অর্থাৎ যবন প্রদেশের দর্শন মোটেই আধ্যাত্মিক দর্শন নহে ; এবং পুথাগারাস, প্লেটাে ও আরিষ্টটলের দর্শনও মূলতঃ আধ্যাত্মিকভাবাক্রোন্ত নয় ; উহাতে আধ্যাত্মিক তত্ত্ব যথেষ্ট আছে, এই পৰ্য্যন্ত বলা যায়। দ্বিতীয়তঃ, কণাদ প্ৰভৃতির ন্যায় গ্ৰীক দার্শনিকের কোন দিনই বলেন নাই, যে মুক্তিই তাহদের দর্শনের প্রয়োজন। গ্রীসে এক অফেয়সপন্থীদিগের সাহিত্যে মুক্তির প্রসঙ্গ আছে ; অপর কোনও সম্প্রদায় সাক্ষাৎভাবে উহার আলোচনা করে নাই। কেন না, মোক্ষ বা আপুনরাবৃত্তি তাহাদিগের ধৰ্ম্মসাধনের লক্ষ্য ছিল না। অতএব, এইখানে আমরা দুই বিষয়ে হিন্দু দর্শন ও গ্ৰীক দর্শনের মধ্যে গুরুতর প্রভেদ দেখিতে পাইতেছি। উভয়ের আরও একটী প্ৰভেদ আছে, তাহাও প্ৰণিধান করা উচিত। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্ৰ প্ৰধানতঃ আস্তিক ও নাস্তিক, এই দুই ভাগে বিভক্ত ; আস্তিক দর্শন আবার বৈদিক ও আবৈদিক এই দুই শ্রেণীভুক্ত। “বৌদ্ধদৰ্শন ও আহতদর্শনে বেদের প্রামাণ্য অঙ্গীকৃত হয় নাই, সুতরাং উহা অবৈদিক। অন্যান্য সমস্ত আস্তিক দর্শনে বেদের প্রামাণ্য স্বীকৃত হইয়াছে বলিয়া উহারা বৈদিক। বৈদিক দর্শনও দুই শ্রেণীতে বিভক্ত-যুক্তিপ্রধান ও শ্রুতিপ্রধান। মীমাংসা ও বেদান্ত, এই দুইটী দর্শন শ্রুতিপ্রধান। এই দর্শনদ্বয়ে শ্রতিই প্রধান প্রমাণ অর্থাৎ শ্রুতিই উক্ত দর্শনদ্বয়ের মূলভিত্তি। উহাতে শ্রাত্যৰ্থ উপপাদনা করিবার জন্তই সমস্ত যুক্তি প্রযুক্ত হইয়াছে। কেবল যুক্তিবলে কোন বিষয় অঙ্গীকৃত বা প্রত্যাখ্যাত হয় নাই।” (ফেলোশিপের লেকচার, প্রথম বর্ষ, ৭৬ পৃষ্ঠা)। গ্ৰীক জাতির