পাতা:সোক্রাটীস (দ্বিতীয় খণ্ড) - রজনীকান্ত গুহ.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম অধ্যায় ] শিক্ষাক্ষেত্রে সোক্রেটসের সংস্কার 8ፃ বোধ হয়, তুমি যে জলপথে ভ্ৰমণে বহির্গত হও না, কিংবা স্বদেশ ছাড়িয়া বিদেশে যাও না, তাহা অতি সুবুদ্ধির পরিচয় ; কেন না, তুমি যদি বিদেশীরূপে অন্য দেশে এই সকল ক্রিয়া করিতে, তবে অচিরাৎ যাদুকর বলিয়া লোকের বিদ্বেষভাজন হইয়া দুঃখ পাইতে।” ( Menon, 79E-80B ) । এই প্ৰকার পরীক্ষার আগুনে যখন মানুষের আত্মাভিমান দগ্ধ হইয়া যায়, তখন সে বুঝিতে পারে, যে সে কত অজ্ঞ ; এই অজ্ঞানতার বোধটিী অপ্রত্যাশিতরূপে উদিত হইয়া কঠিন ক্লেশ প্ৰদান করে ও সকল গৰ্ব্ব চূৰ্ণ করিয়া দেয় ; তখন অন্তরে সংগ্রাম ও অশান্তি উপস্থিত হয় ; কিন্তু তাহার সঙ্গে সঙ্গেই চিত্তবৃত্তিগুলি সজাগ হইয়া উঠে ও সত্য-লাভের আকাজক্ষা উদিত হইয়া থাকে। ইহা না হইলে ভবিষ্যৎ উন্নতির কোনই আশা নাই । সোক্রোটীস বলিতেন, মানুষের জীবনে তিনটী ধাপ আছে। যখন মানুষ ইহাও জানে না, যে সে কিছুই জানে না ; যখন তাহার অজ্ঞানতাব বোধই উদিত হয় নাই; যখন সে অজ্ঞানতাকেই জ্ঞান বলিয়া আলিঙ্গন কবে, এবং নিজের অন্ধতায় তৃপ্ত থাকে, তখন সে সকলের নীচের ধাপে অবস্থান করিতেছে। যখন তাহার চেতনাব সঞ্চার হইল, অজ্ঞানতাব বোধ জন্মিল ও আত্মোন্নতির আকাঙ্ক্ষা জাগিয়া উঠিল, তখন সে মধ্যম ধাপে উপনীত হইয়াছে। তৃতীয় ও সৰ্ব্বোচ্চ ধাপ সত্যজ্ঞান-লাভ। দ্বিতীয়টা অতিক্রম না করিলে উহাতে কেহই উপস্থিত হইতে পারে না। সেক্রিটস এই দ্বিতীয় অবস্থাটীকে সন্তান-সম্ভাবনাব সহিত তুলনা করিতেন। তাহার মতে যাহারা স্বাভাবিক অক্ষমতাবশতঃ, কিংবা উপযুক্ত সুযোগেৰ অভাবে এই অবস্থা প্ৰাপ্ত হয় নাই, জ্ঞানের রাজ্যে তাহারা বন্ধ্যা নারীর তুল্য। তিনি সময়ে সময়ে পরিহাস করিয়া বলিতেন, “আমি আমার মাতার ব্যবসায় 1 frfzo (Theaetetos, l 19) ইহার তাৎপৰ্য্য এই, যে র্তাহার তেজস্বিনী ও স্পষ্টবাদিনী জননী যেমন ধাত্রীরূপে প্ৰসুতির সন্তান-প্রসবে সাহায্য করিতেন, তিনিও তেমনি পুরুষধাত্রী হইয়া জ্ঞান-শিশুর জন্মে সাহায্য করিবার জন্য জ্ঞানার্থীর নিকটে উপস্থিত হইতেন। গুরু ও শিষ্যের সম্বন্ধ এইরূপই হওয়া উচিত। শিষ্যের মনে কিছু ঢুকাইয়া দেওয়া প্রকৃত শিক্ষা নহে; তাহাব মধ্যে যে শক্তি আছে,