পাতা:সোক্রাটীস (প্রথম খণ্ড) - রজনীকান্ত গুহ.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 R সোক্রেটস [ ভূমিকা লক্ষ্য ছিল শান্তি। স্পার্ট যুবকদিগকে সুশিক্ষিত সেনানী করিয়া গড়িয়া তুলিত, আথেন্স তাহাদিগকে শান্তির উপযোগী শিক্ষা দান করিত। স্পার্টা চাহিত বল, আথেন্স চাহিত জ্ঞান। প্ৰত্যেক ব্যক্তির দেহ, মন ও আত্মা সামঞ্জসীভূত ভাবে বিকশিত হইবে, এবং এইরূপে সে রাষ্টধৰ্ম্মপালনের উপযোগিতা লাভ করিবে-আখীনীয় শিক্ষার ইহাই উদ্দেশ্য ছিল। যে মানুষের দৈহিক ও মানসিক বৃত্তিগুলি যথাযোগ্য পরিপুষ্ট হইয়া স্বীয় স্বীয় কৰ্ত্তব্য সম্পাদন করে, সেই মানুষ জ্ঞানী ; যে রাষ্টে প্ৰকৃতিপঞ্জের প্ৰত্যেক শ্রেণী আপনার ও অপরের প্রতি কৰ্ত্তব্য সাধ্যানুরূপ সম্পাদন করে, এবং কোনও সম্প্রদায় অন্যের উপরে অযথা প্ৰভুত্ব করে না, সেই রাষ্ট্র জ্ঞানানুগত। যাহাতে রাষ্ট্র জ্ঞানানুগত ও রাষ্ট্রবাসী পুরুষেরা জ্ঞানবান হয়, আথেন্সের শিক্ষা-পদ্ধতি এইটা সংসাধন করিতে প্ৰয়াস পাইয়াছিল। আখীনীয়েরা আত্মার স্বাধীনতাকেই সৰ্ব্বাপেক্ষা মূল্যবান মনে করিত ; তাহাদিগের নিকটে সেই শিক্ষাই বাঞ্ছনীয় ছিল, যাহা তাহাদিগকে স্বাধীন ও স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করিতে সমর্থ করিবে ; তাহারা জানিত, যে আন্তর অশাসিত থাকিলে শুধু বাহ নিয়মানুগত্যে কোনও ফল নাই । এজন্য আথেন্সে পরিবার ও রাষ্ট্রের মিলন ও সামঞ্জস্য সাধিত হইয়াছিল ; এখানে পারিবারিক ও রাষ্ট্ৰীয় শিক্ষা পরস্পরের সহায়তা করিত। শিক্ষা-প্ৰণালীর বিভিন্নতাবশতঃ স্পাট ও আথেন্সের সভ্যতা ভিন্ন প্ৰকৃতি প্ৰাপ্ত হইয়াছিল। স্পাট নগরী দেখিলেই মনে হইত, উহা একটি রণসাজে সজ্জিত শিবির ; পক্ষান্তরে আথেন্স ছিল প্ৰাচীন কালে পাশ্চাত্য ভূখণ্ডের সর্বপ্রধান বিশ্ববিদ্যালয়। স্পার্ট শিল্প ও সাহিত্যে মানবকে প্ৰায় কিছুই দিয়া যায় নাই ; কিন্তু আথেন্সের ঋণ পৃথিবীর ইতিহাস কোন কালেই পরিশোধ করিতে পরিবে না। আথেন্সে শিক্ষার ভার প্রথমাবধি রাষ্ট্রের হাতে ছিল না বটে, কিন্তু প্ৰত্যেক ব্যক্তি যাহাতে রাষ্ট্রের ব্যবস্থাগুলি বুঝিয়া শুনিয়া তৎপ্ৰতি শ্ৰদ্ধান্বিত হয়, সেদিকে আগীনীয়দিগের প্রখর দৃষ্টি ছিল। রাষ্ট্ৰীয় কৰ্ত্তব্য পালনের উপযোগী শিক্ষা না পাইলে কেহই রাষ্ট্রের কোনও স্বত্ব লাভ করিত না ; সুতরাং পূর্ণরাষ্ট্রবাসী বলিয়া গৃহীত হইবার পূর্বে প্ৰত্যেক যুবককে