পাতা:সোনার চেয়ে দামী (দ্বিতীয় খণ্ড) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজীবের এখন চলছে নিজের দুদিন । ছোটখাট এই দোকানটি আবার দিয়েছে বটে রাখালের সঙ্গে, কিন্তু আগের ব্যবসায়ের তুলনায় এ কিছুই নয়। শুধু খেয়ে পরে বেঁচে থাকার অবস্থা। নিজের সমস্ত সখ, বাসন্তীর সমস্ত আবদার, জীবনকে সরাস করার নানা উপায় আর উপকরণ, হঠাৎ সব বাতিল করে ছোটে ফেলে দিতে হয়েছে। অভ্যস্ত পরিপূর্ণ জীবনটা যেন পরিণত হয়ে গেছে অনভ্যস্ত শূন্য জীবনে। সর্বাঙ্গে গয়না আঁাটা থাকত বাসন্তীর, দামী দামী রঙীণ শাড়ীই শুধু সে পরত। চেয়ে দেখেই সুখে আনন্দে থই থই করত রাজীবের মন । উঠতে বসতে বাসন্তীর ছিল ঝগড়া আর নালিশ, কথা যেন বলত শুধুই মুখ ঝামটা দিয়ে। কিন্তু ওটাই ছিল বাসন্তীর আদর সোহাগ। আহলাদ আব্দারের বিশেষ ধরণ, ঝগড়াটে হয়ে থেকেই সে একেবারে জমিয়ে দিত রসিয়ে দিত জীবনটাকে । পাড়ার মানুষ বলে কুঁদুলে বৌ-তারা কি জানবে সে কেমন কেঁাদল, তারা কি বুঝবে রাজীব কেন নিরীহ গোবেচার সেজে থাকত । তারা তো হিসাব রাখত না বাসন্তী কখন ঝগড়া করে, কখন করে না । দরকারী কথা বলার সময়, রাজীবের শ্রান্ত ক্লান্ত হয়ে থাকার সময়, নিরালায় আদর সোহােেগর সময় ওই ঝগড়াটে মানুষটাই আবার কেমন অন্যরকম মানুষ হয়ে যেত, রাজীব ছাড়া কে তা জানবে । Rbp