পাতা:সোনার চেয়ে দামী (দ্বিতীয় খণ্ড) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাসন্তীকে দেখে কথাটা তাই তার জোরের সঙ্গে মনে পড়ে। স্বামীর জন্য-বিপদগ্ৰস্ত স্বামী যাতে আবার গা-ঝাড় দিয়ে উঠতে পারে, সামলে সুমলে নিতে পারে, আবার ফিরিয়ে আনতে পারে সোনার গয়না। আর জর্জেট বেনারসী কিনে দেবার সামৰ্থ্য-বাসন্তীর পণ শুধু এই জন্য । মোটাসোটা অ্যাটোসটো ফস। সুন্দরী স্বামী সোহাগিনী বেী । স্বামী বই সে জানে না । পাঁচ মিনিটের যায়গায় আধঘণ্টারও বেশী দেরী করে ফেলায় নিজেকে সত্যই অপরাধিনী মনে করে দ্রুতপদে সসঙ্কোচে সাধনা বাড়ী ফিরেছিল। ভাববার চেষ্টাও করেছিল কি ভাবে কি বলে ক্রুদ্ধ রাখালের কাছে কৈফিয়ৎ দেবে। বাসন্তীর কাছে রাখালের কীর্তিকাহিনী শুনতে শুনতে তার মুখে মেঘ নেমে আসে। তবু সে চুপ করে থাকে । তার চুপ করে থাকা আর তার মুখের কঠিন ভাব ভড়কে দেয় বাসন্তীকে। সে একটু শঙ্কিত ভাবেই দরদ দিয়ে জিজ্ঞাসা করে, এরকম কি করতে আছে ভাই ? কিছু হয়েছে নাকি ? তা যদি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্য ভাবনা নেই। যতই রাগ হয়ে থাক, ফিরে আসতে আসতে রাগ অনেকটা জুড়িয়ে যাবে। যা ঘটেছিল বললেই তখন মিটে যাবে ব্যাপার। বরং উল্টো তুমিই ভাই এক হাত নিতে পারবে মানুষটাকে, বলতে পারবে, এখুনি আসব বলে গেলাম। আর ফিরলাম না, একবারটি, দেখতে হয় তো বিপদে আপদে পড়েছি নাকি, কি হল 9