চাকরী পেয়ে গেছে। কিন্তু বিড়ির পাতা আর তামাকের ছোটখাট ব্যবসায়ী রাজীব তো সে দরের বা স্তরের মানুষ নয়, এ বাজারে একজনকে চাকরী জুটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করাটাই তার পক্ষে হাঙ্গামার ব্যাপার বৈকি । স্বেচ্ছায় যেচে সে এই হাঙ্গামা করতে চায় কেন ? রাখাল তার আত্মীয়ও নয়, বন্ধুও নয়। ভালরকম জানাশোনাও নেই তাদের মধ্যে । রাখালের চাকরীর জন্য "তার এত মাথাব্যথা কেন ? বাসন্তী বলেছে ? বাসন্তী কেন রাখালকে চাকরী জুটিয়ে দেবার কথা রাজীবকে বলবে ? তার স্বাৰ্থ কি ? সাধনা নিশ্বাস ফেলে। ঠিকমত বোঝা গেল না । শুধু ক্ষুদ্র সঙ্কীর্ণ স্বাৰ্থ নিয়ে যে জগৎ চলে না, এ কি তারই একটা প্ৰমাণ ? আধা কাপ চিনি ধার চাইতে যেতে বাসন্তী কি রকম খুন্সীতে ডগমগ হয়ে কাপ ভিতি চিনি দিয়ে বলেছিল যে ধারের কারবার তাদের মধ্যে নয়, বার বার সে দৃশ্য মনে আসে। মনে আসে তার হারটি কিনতে চাওয়ার ভূমিকা করা । এভাবে হারটা কিনতে চাওয়ায় পাছে তাকে অপমান করা হয়, সে রাগ করে, এজন্য সত্যই ভয় ছিল বাসন্তীর ! রাজীবের সঙ্গে বাসন্তীর অনেক অমিল, অনেক বিষয়ে রাজীবকে তার অবিশ্বাস। শুধু রাজীবের বেলা নয়, পুরুষ মানুষ সম্পর্কে বাসন্তীর শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস বড় কম । এটা বাসন্তী গোপনাও করে না এবং সাধনাও আগেই টের পেয়েছিল । 8V
পাতা:সোনার চেয়ে দামী (প্রথম খণ্ড) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৬
অবয়ব