কি এরূপ অবস্থায় আমরা স্বাধীনতারূপ রত্নমুকুট মস্তকে ধারণ করিতে পারিব না? পারিব, কিন্তু পশুভাব থাকিতে প্রকৃত স্বাধীনতা লাভ হইবে না। যখন পশুভাব গিয়া দেবভাবের উদয় হইবে তখনই যথার্থ স্বাধীনতা লাভ হইবে। মনে করুন, এককালে এই বিশাল ভারতরাজ্য ব্রাহ্মণের ছিল। [উপস্থিত কালের ব্রাহ্মণ নয়, কারণ উপস্থিত কালের অধিকাংশই ব্রহ্মবন্ধু বা পতিত ব্রাহ্মণ। এরূপ ব্রাহ্মণের কথা আমি বলিতেছি না, ইহাদের কোন জ্ঞান নাই বলিলেও অত্যুক্তি হয় না, তবে যাহা কিছু আছে তাহা মৌখিক। কার্য্যে কিছুই নাই কেবল বচন সার। পাঠক যদি ব্রাহ্মণ হন তাহা হইলে ব্রাহ্মণের পূর্ব্বাবস্থা এবং উপস্থিত অবস্থা বিচার করিয়া দেখিলেই আমরা পতিত হইয়াছি কি না বুঝিতে পারিবেন।] তাঁহারা এই বিশাল রাজ্যের ভার ক্ষত্রিয়দিগকে দিয়া স্বাধীনতা বা আত্মজ্ঞান লাভের জন্য পার্থিব সুখকে অকিঞ্চিৎকর বিবেচনা করিয়া যোগপথ অবলম্বন দ্বারা আত্মজ্ঞান বা স্বাধীনতা রূপ রত্নমুকুট ধারণ করিয়াছিলেন। তাঁহারা যখন সেই স্বাধীনতারূপ রত্নমুকুট মস্তকে ধারণ করিয়াছিলেন, সে অবস্থায় সমগ্র ভারতের রাজন্যবর্গ এবং পাশ্চাত্য প্রদেশের এলেক্জাণ্ডার প্রভৃতি রাজগণ তাঁহাদের সম্মুখে করযোড়ে দণ্ডায়মান থাকিতেন। উপস্থিত কালে আর তাহা দেখা যায় না, যাহা কিছু দেখা যায় সব বিপরীত। মুখে আমাদের আত্মজ্ঞান বা ব্রহ্মজ্ঞানের কথার অভাব নাই, কিন্তু কার্য্যে পশুভাবের পরিচয়। এরূপ অবস্থায় আমার ন্যায় পশুভাবাপন্ন জীবের স্ত্রীস্বাধীনতা দিতে যাওয়া কেবল ইন্দ্রিয়পরিতৃপ্তির জন্য মাত্র। ইন্দ্রিয়-
পাতা:স্ত্রীস্বাধীনতা ও স্ত্রীশিক্ষা.pdf/১৩
অবয়ব
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
(৯)