নিজের কষ্টের বিষয় এবং আমাদের মনের ভাব তাঁহার কাছে ব্যক্ত করিতে পারিব না। সুতরাং বালকদিগেরও রাজভাষা জানা উচিত। কিন্তু তাই বলিয়াই যে আত্মধর্ম্ম ও আত্মনীতি বিসর্জ্জন দিয়া অপরা বিদ্যা লইয়াই মজিয়া থাকিতে হইবে তাহা নিতান্ত অনুচিত। আমাদের না হয় কার্য্যের অনুরোধে মজিতে হইয়াছে। তাই বলিয়া স্ত্রীদিগকে মজাই কেন? যে দেশে সাবিত্রী, সীতা, দময়ন্তী প্রভৃতি স্ত্রীগণ জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন, আজ কিনা সেই দেশের স্ত্রীলোকেরা শিক্ষার গুণে ধাত্রীরূপে বিরাজিতা হইতেছেন। হায়! হায়! আমরা কি ভ্রমেই পড়িতেছি। আমরা যাঁহাদিগের অনুকরণ করিতে যাইতেছি, তাঁহারা ত স্বদেশীয় আচার ও নীতি ত্যাগ করেন না। সকল দেশের দেশাচার সমান হইতে পারে না এবং হওয়াও উচিত নয়। সকল দেশের জল বায়ুর গুণ যখন সমান হয় না, পৃথক্ পৃথক্ দেখা যায়, তখন দেশাচার কেমন করিয়া সমান হইবে? আমাদের দেশের আচার ব্যবহার আমাদের পক্ষে যেরূপ উপযোগী, অপর দেশের লোকের আচার ব্যবহার ও নীতি আমাদের পক্ষে তেমনি অনুপযোগী। তবে হয় ত যৌবনে মত্ত হইয়া দুদিনের জন্য অপরের আচার ব্যবহার অনুকরণ করিতে পারি, কিন্তু তাহা স্থায়ী হয় না; সময়ে তাহার পরিবর্ত্তন হইয়া যায় অর্থাৎ বেশী বয়স হইলে আর সে ভাব থাকে না। তখন বাল্যকালের যে সংস্কার, তাহাই মনে উদয় হয়, এবং ঐ সংস্কার পরিত্যাগ হেতু সর্ব্বদা অনুতাপ করিতে হয়। মনের অনুতাপ থাকিতে শান্তি স্থাপন হয় না। সুতরাং সর্ব্বদাই অশান্তি। এরূপ অশান্তিকর শিক্ষালাভে অনিষ্ট
পাতা:স্ত্রীস্বাধীনতা ও স্ত্রীশিক্ষা.pdf/২৫
অবয়ব
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
(২১)