পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার কথা সত্য, এ বোধকরি কেহই অস্বীকার করতে পারে না। বাস্তবিকই স্বাধীনতায় মানবের জন্মগত অধিকার, ভারতবর্ষের শাসন-ভার ভারতবর্ষীয়দের হাতেই থাকা চাই এবং এ দায়িত্ব থেকে যে কেউ তাদের বঞ্চিত করে রাখে, সেই অন্যায়কারী। এ সবই সত্য। কিন্তু এমনি আরও ত একটা কথা আছে, যা’কে স্বীকার না করে পথ নেই, —সে হচ্ছে আমাদের কৰ্ত্তব্য । Right এবং Duty এই দুটো অনুপূরক শব্দ ত সমস্ত আইনের গোড়ার কথা । সকল দেশের সকল সামাজিক বিধানে একটা ছাড়া যে আর একটা এক মুহূৰ্ত্তও দাড়াতে পারে না, এতে অবিসম্বাদী সত্য । কেবল আমাদের দেশেই কি এই বিশ্বনিয়মের ব্যতিক্রুম ঘটবে ? স্বরাজ বা স্বাধীনতা যদি আমাদের জন্মস্বত্ব হয়, ঠিক ততখানি কৰ্ত্তব্যের দায় নিয়েও ত আমরা মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছি । একটাকে এড়িয়ে আর একটা পাব এত বড় অন্যায়, অসঙ্গত দাবী, —এত বড় পাগলামী আর ত কিছু হ’তেই পারে না । ঘটনাক্রমে কেবল মাত্র ভারতবর্ষীয় হ’য়ে জন্মেছি বলেই ভারতের স্বাধীনতার অধিকার উচ্চকণ্ঠে দাবী করাও কোন মতেই সত্য হ’তে পারে না ! এবং এ প্রার্থনা ইংরাজ কেন, স্বয়ং বিধাতাপুরুষও বোধ করি মুধুর করতে পারেন না । এই সত্য, এই সনাতন বিধি, এই চিরনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা হৃদয় দিয়ে হৃদয়ঙ্গম করার দিন আজ আমাদের এসেছে। একে ফাকি দিয়ে স্বাধীনতার অধিকার শুধু আমরা কেন, পৃথিবীতে কেউ কখন পায়নি, পায়ন এবং আমার বিশ্বাস, কোনদিন কখনো কেউ পেতেও পারে না। কৰ্ত্তব্যহীন অধিকারও অনধিকারের সমান। কাজ কোরব না, মূল্য দেবো না অথচ পাবে, প্রার্থনার এই অদ্ভুত O) “