পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য বলিতেছি না, তবুও কেমন যেন পারিয়া উঠিন। আমাদের সমাজে এ বস্তুটিকে লোকে গোপন করিতে চাহে বলিয়াই বোধ হয় সুদীর্ঘ সংস্কারে যুরোপীয় সাহিত্যের ন্যায় ইহার প্রকাশু demonstrationএ লজ্জ করে। খুব সম্ভব আমার দুর্বলতা। কিন্তু ভাবি, এই দুৰ্ব্বলতা লইয়াই তো অনেক প্রণয়-চিত্র লিপিবদ্ধ করিয়াছি, মুস্কিলে তো পড়ি নাই। কাব্য-সাহিত্য এক, কথা-সাহিত্য আর হৃদয়-যমুনা শুন’ বিজয়িনী চিত্রাঙ্গদা প্রভৃতি কাব্যের মধ্যে যাহাই ঘটুক কথা-সাহিত্যে মনে হয় আমারই মত কবি এ দৌৰ্ব্বল্য কাটাইয়া উঠিতে পারেন নাই। বোধ করি এই সকল এবং এমনি আরও দুই একটা ছোট খাটো ক্রটির কথা লোকের মুখে শুনিয়া কবি অতিশয় ক্ষুন্ন হইয়াছেন। "বিদেশের আমদানি” কথাটা তাহার ক্ষোভেরই কথা। দেশ ভেদে সাহিত্যের ভাষা আলাদা হয়, কিন্তু সত্যকার সাহিত্যের যে দেশ-বিদেশ নাই এ সত্য কবি জানেন। এবং সকলের চেয়ে বেশী করিয়াই জানেন। ত’ ন হইলে আজ বিশ্বশুদ্ধ লোকে তাহাকে বিশ্বের কবি বলিয়া মৰ্য্যাদা দিত না । কবির স্বষ্টি সমুদ্রের ন্যায় অপরিসীম। নজির আছে জানি, তথাপি সেই সমুদ্র হইতেই স্ব-মতের অতুকূলে নজির তুলিয় তাহাকে খোটা দেওয়া শুধু অবিনয় নয়, অন্যায়। কবি বলিয়াছেন,— “ভারতসাগরের ওপারে (অর্থাৎ য়ুরোপে ) যদি প্রশ্ন করা যায় তোমাদের সাহিত্যে এত হটগোল কেন ? উত্তর পাই, হট্টগোল সাহিত্যের কল্যাণে নয়, হাটেরই কল্যাণে । হাটে যে ঘিরেছে । ভারত-সাগরের এ পারে যখন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করি তখন জবাব পাই, হাট ত্রি-সীমানায় নেই বটে, কিন্তু হটগোল যথেষ্ট আছে । আধুনিক সাহিত্যের i. ঐটেই বাহাদুরী ।” >२8