পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বদেশ এই গল্পের স্বার্থকতা যে কি আমি বুঝতে পারি নি। ছেলে দুটি কে তা অম্বুমান করা শক্ত নয় ; কিন্তু এক ছেলের প্রতি আর এক ছেলের অকারণ দৌরাত্ম্য দেখে যে বাপ প্রসন্ন হন, তিনি যে কিরূপ বাপ তা’ বোঝা যায় না । তবে একথা বেশ বোঝা যায়, এমন বাপের পায়ের দিকে যে ছেলে তাকিয়ে থাকে,—তা’ তিনি যত বড় রথেরই রথী হোন, তার “মরণং ধ্রুবম” ৷ অতঃপর কবি এই দুটি ছেলের জীবন বৃত্তান্তও দিয়েছেন । মোটরহাকানো ছেলেটি ত ম্যাজিক থেকে বিজ্ঞানের ক্লাশে প্রোমোশন পেলে, কিন্তু যে ছেলেটির “মরণং ধ্রুবম্” সে তার ম্যাজিক ও তন্ত্র মন্ত্র নিয়েই পড়ে রইল। এই তন্ত্র মন্ত্রের পরে কঠোর কটাক্ষ কবি পূর্বেও করেছেন। তার ‘অচলায়তনে এ নিয়ে হাসি তামাস অনেক হ’য়ে গেছে, যার ওয়াকিফু-হাল তারা এর মীমাংসা করবেন কিন্তু আমার মনে হয় এখানে এ সম্পূর্ণ নিম্প্রয়োজন । বিশ্ববস্তুর পেছনে যে কোন একটা অজ্ঞেয় শক্তি আছে, মানব ইতিহাসে এ একটা প্রাচীন তথ্য । এবং আজ বিংশ শতাব্দীতেও কুল কিনারা তার তেমনি অজ্ঞাত। সেই অজ্ঞেয় শক্তিকে প্রসন্ন করে কাজ আদায়ের চেষ্টা মানুষ চিরদিন করে আসছে,—আজও তার উপায় বা’র হয়নি, অথচ আজও তার অবসান নেই। এই উপায় আবিষ্কারের পথে কি করে যে প্রার্থনা একদিন ম্যাজিকে অর্থাৎ মন্ত্রতন্ত্রে এবং ম্যাজিক আর একদিন প্রার্থনায় চেহারা বদলে দাড়ায় এ তর্ক তুলে পুথি বাড়াতে আমার সাধ নেই। ঈশ্বরের ধারণার অভিব্যক্তির ইতিহাসের এই অংশটা বিজ্ঞানের পরিণতির প্রশ্নে আমার অপ্রাসঙ্গিক মনে হয় । ৩২