পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য আমি বলি, তা’ হ’লে আপনি নিজেই সেটা লিখুন। র্তারা বলেন, তাহলে আর ভাবনা ছিল কি ? ওইটে যে পারিনে ? আমি বলি, আজ ন পারলেও দুদিন পরে পারতে পারেন । অমন জিনিষটে থামৃক হাতছাড়া করবেন না। এরা জানেন না, সংসারে অদ্ভুত কিছু একটা জানাই সাহিত্যিকের বড় উপকরণ নয়। আমি ত জানি কি করে আমার চরিত্রগুলি গোড়ে’ ওঠে । বাস্তব অভিজ্ঞতাকে আমি উপেক্ষা করচিনে, কিন্তু, বাস্তব ও অবাস্তবের সংমিশ্রণে কত ব্যথা, কত সহানুভূতি, কতখানি বুকের রক্ত দিয়ে এরা ধীরে ধীরে বড় হ’য়ে ফোটে, সে আর কেউ না জানে আমি ত জানি। সুনীতি দুনীতির স্থান এর মধ্যে আছে, কিন্তু বিবাদ করবার জায়গা এতে নেই,—এ বস্তু এদের অনেক উচ্চে । এদের গণ্ডগোল করতে দিলে যে গোলযোগ বাধে যে কাল তাকে ক্ষম। করে না । নীতি-পুস্তক হবে, কিন্তু সাহিত্য হ’বে না। পুণ্যের জয় এবং পাপের ক্ষয়, তাও হবে, কিন্তু কাব্যস্বষ্টি হ’বে না। আমার মনে আছে, ছেলেবেলায় ‘কৃষ্ণকাস্তের উইলের’ রোহিণীর, চরিত্র আমাকে অত্যন্ত ধাক্কা দিয়েছিল । সে পাপের পথে নেমে গেল। তারপরে পিস্তলের গুলিতে মারা গেল। গরুর গাড়ীতে বোঝাই হয়ে লাস চালান গেল। অর্থাৎ হিন্দুত্বের দিক দিয়ে পাপের পরিণামের বাকি কিছু আর রইল না। ভালই হ’ল। হিন্দু সমাজও পাপীর শাস্তিতে তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলে’ বঁাচলো। কিন্তু আর একটা দিক ? যেটা এদের চেয়ে পুরাতন, এদের চেয়ে সনাতন,— নর-নারীর হৃদয়ের গভীরতম, গুঢ়তম প্রেম ?—আমার আজও যেন মনে হয়, দুঃপে সমবেদনায় বঙ্কিমচন্দ্রের দুই চোখ, অশ্রুপরিপূর্ণ হয়ে ԳԵր