পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సె 8 স্বদেশ কী নাম দেওয়া যাইতে পারে! তুমি পাইবে গৌরব এবং তাহার সঙ্গে অর্থলাভের সম্ভাবনাও যথেষ্ট আছে, তুমি তাহার প্রত্যাশায় প্রাণপণ করিতে পার, কিন্তু ইহাদের সম্মুখে কোন প্রলোভন আছে ? বিজ্ঞানের উন্নতিকল্পে জীবচ্ছেদ (vivisection ) লইয়া যুরোপে অনেক তর্কবিতর্ক হইয়া থাকে। সজীব জন্তুদিগকে লইয়া পরীক্ষা করিবার সময়ে যন্ত্রণানাশক ঔষধ প্রয়োগ করিবার ঔচিত্যও অালোচিত হয়। কিন্তু বাহাদুরি করিয়া বাহবা লইবার উদ্দেশে দীর্ঘকাল ধরিয়া অনিচ্ছুক মানুষদের উপরে যে অসহ পীড়ন চলে, ভ্রমণবৃত্তাস্তের গ্রন্থে তাহার বিবরণ প্রকাশ হয়, সমালোচকেরা করতালি দেন, সংস্করণের পর সংস্করণ নিঃশেষিত হইয়া যায়, হাজার হাজার পাঠক ও পাঠিকা এই-সকল বর্ণনা বিস্ময়ের সহিত পাঠ ও আনন্দের সহিত আলোচনা করেন। দুর্গম তুষারপথে নিরীহ শোকা-বাহকদল দিবারাত্র যে অসহ কষ্টভোগ করিয়াছে তাহার পরিণাম কী ? ল্যাগুর-সাহেব নাহয় লাসায় পৌছিলেন, তাহাতে জগতের এমন কী উপকার হওয়া সম্ভব যাহাতে এই-সকল ভীত পীড়িত পলায়নেচ্ছ মানুষদিগকে অহরহ এত কষ্ট দিয়া মৃত্যুর পথে তাড়ন করা লেশমাত্র বিহিত বলিয়া গণ্য হইতে পারে ? কিন্তু কই, এজন্য তো লেখকের সংকোচ নাই, পাঠকের অনুকম্পা নাই ! তিববতীরা কিরূপ নিষ্ঠুরভাবে পীড়ন ও হত্যা করিতে পারে, শোকারা সেই কারণে তিব্বতীদিগকে কিরূপ ভয় করে, এবং তাহাদিগকে তিববতীদের হস্ত হইতে রক্ষা করিতে ব্রিটিশরাজ কিরূপ অক্ষম, তাহা ল্যাগুর জানিতেন ; ইহাও তিনি জানিতেন, তাহার মধ্যে যে উৎসাহ উত্তেজনা ও প্রলোভন কাজ করিতেছে শোকাদের মধ্যে তাহার লেশমাত্র নাই। তৎসত্ত্বেও ল্যাগুর তাহার গ্রন্থের ১৬৫ পৃষ্ঠায় যে ভাষায় যে ভাবে তাহার বাহকদের ভয়দুঃখের বর্ণনা