পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধর্মবোধের দৃষ্টাস্ত వె& করিয়াছেন, তাহা তর্জমা করিয়া দিলাম— ‘তাহারা প্রত্যেকে হাতে মুখ ঢাকিয়া ব্যাকুল হইয়া কাদিতেছিল। কাচির দুই গাল বাহিয়া চোখের জল ঝরিয়া পড়িতেছিল, দোলা ফোপাইয়া কাদিতেছিল, এবং ডাকু ও অন্য যে একটি তিববতী আমার কাজ লইয়াছিল— যাহারা ভয়ে ছদ্মবেশ গ্রহণ করিয়াছিল–– তাহারা তাহাদের বোঝার পশ্চাতে লুকাইয়া বসিয়াছিল । আমাদের অবস্থা যদিও সংকটাপন্ন ছিল তবু আমাদের লোকজনদের এই আতুর দশ। দেখিয়া আমি না হাসিয়া থাকিতে পারিলাম না।’ ইহার পরে এই দুর্ভাগারা পলায়নের চেষ্টা করিলে ল্যাগুর তাহাদিগকে এই বলিয়া শাস্ত করেন যে, "যে কেহ পলায়নের বা বিদ্রোহের চেষ্টা করিবে, তাহাকে গুলি করিয়া মারিব ? কিরূপ তুচ্ছ কারণেই ল্যাগুর-সাহেবের গুলি করিবার উত্তেজনা জন্মে, অন্যত্র তাহার পরিচয় পাওয়া গেছে । তিববতী কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে ল্যাণ্ডর যখন প্রথম নিষেধ প্রাপ্ত হইলেন তখন তিনি ভান করিলেন, যেন ফিরিয়া যাইতেছেন। একটা উপত্যকায় নামিয়া আসিয়া দুরবীন কষিয়া দেখিলেন, পাহাড়ের শৃঙ্গের উপর হইতে প্রায় ত্ৰিশটা মাথা পাথরের আড়ালে উকি মারিতেছে। সাহেব লিখিতেছেন, ‘আমার বড়ো বিরক্তিবোধ হইল। যদি ইচ্ছা হয় তো ইহার প্রকাশুভাবেই আমাদের অনুসরণ করে না কেন ? দূর হইতে পাহার দিবার দরকার কী ! অতএব আমি আমার আটশো-গজী রাইফেল লইয়া মাটিতে চ্যাপ্টা হইয়া শুইলাম এবং যে মাথাটাকে অন্যদের চেয়ে স্পষ্ট দেখা যাইতেছিল তাহার প্রতি লক্ষ স্থির করিলাম ।’ এই 'অতএব’এর বাহার আছে! লুকাচুরিকে ল্যাগুর-সাহেব কী ঘৃণাই করেন । তিনি এবং তাহার সঙ্গের আর-একটা মিশনারি-সাহেব নিজেদের হিন্দু তীর্থযাত্রী বলিয়া পরিচয় দিয়াছেন, প্রকাশ্বে ভারতবর্ষে d