পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SV) স্বদেশ ফিরিবার ভান করিয়া গোপনে লাসায় যাইবার উদযোগ করিতেছেন, কিন্তু পরের লুকাচুরি ইহার এতই অসহ যে ভূমিতে চ্যাপ্টা হইয়া আত্মগোপনপূর্বক তৎক্ষণাৎ আটশো-গজা রাইফেল বাগাইয়া কহিলেন, ‘I only wish to teach these cowards a lesson : wif at কাপুরুষদিগকে শিক্ষা দিতে ইচ্ছা করি।” দূর হইতে লুকাইয়া রাইফেল-চালনায় সাহেব যে পৌরুষের পরিচয় দিতেছিলেন তাহার বিচার করিবার কেহ ছিল না । আমাদের ওরিয়েণ্টগলদের অনেক দুর্বলতার কথা আমরা শুনিয়াছি, কিন্তু চালুনি হইয়া ছচকে বিচার করিবার প্রবৃত্তি পাশ্চাত্যদের মতো আমাদের নাই। আসল কথা, গায়ের জোর থাকিলে বিচারাসনের দখল একচেটে করিয়া লওয়া যায় ; তখন অন্যকে ঘৃণা করিবার অভ্যাসটাই বদ্ধমূল হইয়া যায়, নিজেকে বিচার করিবার অবসর পাওয়া যায় না । আশিয়ায় আফ্রিকায় ভ্রমণকারীরা অনিচ্ছুক তৃত্যবাহকদের প্রতি যেরূপ অত্যাচার করিয়া থাকেন, দেশ-আবিষ্কারের উত্তেজনায় ছলে বলে কৌশলে তাহাদিগকে যে করিয়া বিপদ ও মৃত্যুর মুখে ঠেলিয়া লইয়া যান, তাহা কাহারো অগোচর নাই। অথচ স্যাঙ্ক টিটি অফ লাইফ সম্বন্ধে এই-সকল পাশ্চাত্য সভ্যজাতির বোধশক্তি অত্যন্ত সুতীব্র হইলেও কোথাও কোনো আপত্তি শুনিতে পাই না । তাহার কারণ ধর্মবোধ পাশ্চাত্য সভ্যতার অভ্যস্তরিক নহে, স্বার্থরক্ষার প্রাকৃতিক নিয়মে তাহ বাহির হইতে অভিব্যক্ত হইয়া উঠিয়াছে। এইজন্য য়ুরোপীয় গণ্ডীর বাহিরে তাহা বিকৃত হইতে থাকে। এমন-কি, সে গণ্ডীর মধ্যেও যেখানে স্বার্থবোধ প্রবল সেখানে দয়াধর্ম রক্ষণ করার চেষ্টাকে যুরোপ দুর্বলতা বলিয়া ঘৃণা করিতে আরম্ভ করিয়াছে। যুদ্ধের সময় বিরুদ্ধ পক্ষের সর্বস্ব জালাইয়া দেওয়া, তাহীদের অনাথ শিশু ও স্ত্রীলোকদিগকে বন্দী করার বিরুদ্ধে কথা কহা ‘সেণ্টিমেণ্টালিটি। যুরোপে